আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ

স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে দিশেহারা আশুলিয়ার আব্দুর রশিদ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আমার স্ত্রী-সন্তান কোথায়? আমাকে ছেড়ে কিভাবে তোরা চলে গেলি। আমি কখনও ভাবতে পারি নাই আমার স্ত্রী-সন্তান আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। আমি এখন কাকে নিয়ে বাঁচবো।

এমন করেই প্রলাপ করছেন স্ত্রী ও মেয়ে হারা আব্দুর রশিদ। কোন কথা বলতে পারছেন না। শনিবার রাতে নরসিংদী জেলার পাঁচদোনা এলাকার ঘোড়াশাল-টঙ্গী আঞ্চলিক সড়কের সাকুড়ার মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন রশিদের স্ত্রী ও আড়াই বছরের মেয়ে। এ ঘটনায় তার পরিবারের আরও তিনজন সদস্যও নিহত হয়।

জানা যায়, গত শুক্রবার রাত তিনটার দিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর মধ্যপাড়া এলাকার খাঁ বাড়ি থেকে ১২ জন সিলেটের মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। আব্দুর রশিদের স্ত্রী রুবি আক্তার (৩৩) ও তাঁর আড়াই বছরে মেয়েও ছিল ওই গাড়িতে। সিলেট থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় রশিদের পরিবারের ৫ জন মারা যায়। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস স্ত্রী-সন্তানকে হারিয়ে বেঁচে ফেরেন রশিদ।

আব্দুর রশিদ আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর মধ্যপাড়া এলাকার ইউনুস খানের ছেলে। বাকি নিহতরা হলেন, রশিদের ভাই ছাইফুলের স্ত্রী মুক্তি আক্তার (৩০) ও তাঁর ছেলে সাদেকুল (৮) ও তার ভাই হারুন খানের শাশুড়ী। একসাথে এতগুলো স্বজন হারিয়ে এখন বিলাপ করে দিন পার করছেন পাগল প্রায় আব্দুর রশিদ।

আহতরা হলেন রাজিয়া (৪০), ইউসুফ মিয়ার ছেলে রশিদ (৪০), জাহের আলীর ছেলে কাজিম উদ্দিন (৪২), সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাইফা (১২), হারুন মিয়ার স্ত্রী শারমীন (৪০) ও মেয়ে ইসরাত জাহান (৮) ও কাদির মিয়ার স্ত্রী সামসুন্নাহার (৬০)।

নিহতদের মরদেহ রোববার (২০ জুন) দুপুরে আশুলিয়ায় তাদের বাড়িতে আনা হয়। পরে তাদের দেখার জন্য ভিড় জমে এলাকাবাসীর। সবাইকে নিহতদের মুখ দেখানো হয়। পরে গোসল শেষ করে আসরের নামাজের পর ইয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা পড়ে ইয়ারপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহতদের বাড়িতে এলাকাবাসীর ভিড়। ছবিঃ ঢাকা অর্থনীতি

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রবিউল ইসলাম বলেন, একটি ট্রাক আমাদের গাড়ি ওভারটেক করতে গিয়ে আমাদের গাড়ির পেছনে লাগিয়ে দেয়। গাড়ির পিছনের দুই সিটের ৫ জন মারা যায়। সামনের সবাই সামান্য আহত হই। আরও ৫ জন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুর্ঘটনার পরে মাইক্রোবাস ও ট্রাকের চালকরা আমাদের সহযোগিতা করেন। যখন তিন জন মারা যায় তখন তারা পালিয়ে যায়।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close