দেশজুড়ে
স্ত্রী আত্মগোপনে, মামলা থেকে বাঁচতে স্বামীর আত্মহত্যা!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার সীমা আক্তারকে কেউ খুন করে লাশ গুম করেনি। তাকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে সীমা আক্তারকে হত্যার মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে আত্মহত্যা করেন স্বামী সাইফুল ইসলাম।
বুধবার (৭ আগস্ট) কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল জবানবন্দি দিয়েছেন সীমা আক্তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের নাল্লা গ্রামের মোরশেদ মিয়ার মেয়ে সীমা আক্তারের সাথে চার বছর আগে একই উপজেলা সদরের আটকিল্লাপাড়ার সহিদুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। গত মে মাসের ১৮ তারিখ থেকে সীমা আক্তারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ ঘটনায় ২৩ মে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে সীমা আক্তারের মা হেলেনা বেগম বাদী হয়ে তার মেয়েকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে খুন করে লাশ ঘুমের একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন সাইফুল।
ঘটনাটি মিমাংসার জন্য সাইফুল ও সীমা আক্তারের পরিবারের লোকজন একাধিকবার বৈঠকও করেছিলেন। একটি বৈঠকে সাইফুলকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা দিতে পারেনি। এদিকে স্ত্রী উধাও। অন্য দিকে হত্যা ও গুমের মামলা। সেই চিন্তায় গত ২১ জুলাই সাইফুল ইসলাম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এনিয়ে সাইফুলের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সীমা আক্তারকে মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকা থেকে জীবিত উদ্ধার করে।
পরে বুধবার কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন সীমা আক্তার। তিনি আদালতকে বলেন, তার স্বামী তাকে নির্যাতন করতেন। এ কারণে তিনি কাউকে কোনো কিছু না বলেই গাজীপুরে গিয়ে গার্মেন্টে চাকরি করেছেন। পরে বাড়িতে আসলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসেন।
নিহত সাইফুল ইসলামের ভাই রাজিব মিয়া ও শ্যামল মিয়া বলেন, তাদের বড় ভাই সাইফুলের স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য ছিল। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই জ্বালা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, সীমা আক্তারকে খুন করে লাশ গুমের একটি অভিযোগ এনে তার মা হেলেনা আক্তার বাদী হয়ে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরে দুই পরিবারের মধ্যে মামলাটি মিমাংসার বৈঠক হয়েছিল। দুই লাখ টাকা সাইফুল দিলে মামলা আপোস করবে বলেছিলেন। কিন্তু সাইফুল সেই টাকাও দিতে পারেননি। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। জীবিত সীমা আক্তারকে আদালতে নিয়ে গেলে তিনি বলেন, স্বামীর নির্যাতনের কারণে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।