দেশজুড়ে
স্কুলের বেতন হিসেবে টাকার পরিবর্তে প্লাস্টিক বর্জ্য
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে চালু হয়েছে একটি স্কুল। সেখানে বেতন হিসেবে টাকার বদলে দিতে হয় প্লাস্টিক বর্জ্য। পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা থেকে এই কর্মসূচী চালু করেছে স্কুলটি। প্রচলিত শিক্ষা আর কারিগরি প্রশিক্ষণকে একসঙ্গে মিলিয়ে তৈরি হয়েছে পাঠ্যক্রম। ভারতের আসামে ব্যতিক্রমী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি চালু করেছে এক তরূণ দম্পতি।
২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে আকশার ফোরাম স্কুলের কার্যক্রম শুরু হয়। স্কুলে প্রতি সপ্তাহে শিক্ষার্থীকে ২৫ টুকরো প্লাস্টিক জমা দিতে হয়।
ফোরামের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পারমিতা শর্মা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ করা শুরু করি। কারণ, এটা একটা সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে পারি যে, শীতের মাসগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই তারা প্লাস্টিক পোড়ায়। শিক্ষার্থীরা এর চারপাশে দাঁড়িয়ে গা গরম করে। তাই এটি বন্ধ করতে আমরা প্লাস্টিক বর্জ্য জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করি।
শিক্ষার্থীরা প্লাস্টিকের বোতলে প্যাকেটগুলো ঠেসে ভরে ‘ইকো-ব্রিকস’ তৈরি করে। সেই ইকো-ব্রিকস দিয়ে গাছের বেড়াসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে শিক্ষার্থীরা। এটি দিয়ে পায়ে হাঁটা পথ তৈরি করেছে শিক্ষার্থীরা। এটি চালুর পর শিক্ষার্থীরাও সচেতন হচ্ছে।
পারমিতা জানান, শিক্ষার্থীরা এখন জানে যে প্লাস্টিক পোড়ানো ক্ষতিকর। তারা বাড়িতে বাবা-মায়েদেরও এ বিষয়ে সচেতন করে।
এই স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সুবিধাবঞ্চিত। অনেকেই জীবিকা অর্জনের জন্য স্কুল থেকে ঝরে পড়েছিল। কিন্তু এই স্কুল পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আয়ের পথ খুঁজে বের করেছে। বয়সে ছোট শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় সাহায্য করার জন্য তুলনামূলক বড় শিক্ষার্থীদের ঘণ্টা হিসেবে বেতন দেওয়া হয়। এছাড়া কারিগরি শিক্ষা তাদেরকে অন্য পেশায় দক্ষ হতে সাহায্য করে।
পারমিতা বলেন, আমরা আশা করছি যে, পর্যাপ্ত দক্ষতা নিয়ে তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। আমরা একটি মডেল তৈরি করার চেষ্টা করছি যাতে স্কুলের পরেই কাজে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়।
মাত্র ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এই স্কুল শুরু হয়েছিল। বর্তমানে বাঁশের ঘরের স্কুলটিতে শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। এই মডেলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভারতজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চান এই দম্পতি।