বিশ্বজুড়ে
সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: সৌদি আরবের জেদ্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জেদ্দার বুরিমান সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে এ তথ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কনস্যুলেটর আইন সহকারী হাসিব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কনস্যুলেটর পক্ষ থেকে নিহতদের লাশ প্রক্রিয়া শনাক্ত করণসহ সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিহত তিন বাংলাদেশি হলেন, আল আমিন টাঙ্গাইল জেলার ফরহাদ আলীর ছেলে। শাকিল মিয়া ময়মনসিংহের গফুরগাঁওয়ের পিতা: কামাল উদ্দিনের ছেলে। কাওমার মিয়া নরসিংদী জেলার কাজল মিয়ার ছেলে। নিহতেরা সবাই ইয়ামামা কোম্পানিতে চার বছর ধরে কাজ করছেন।
নিহত শাকিল মিয়ার চাচাতো বড় ভাই রাসেল জানান, রাতে একটার সময় তারা ডিউটিতে যায় কিন্তু দুপুর বারোটা সময় কাজ শেষ করে ফেরার আগ মুহূর্তে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শাকিল পরিবারের বড় ছেলে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে শাকিল সবার বড়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনের সম্বল ছিল শাকিল।
রাসেল মিয়া আরোও বলেন, শাকিল কিছু দিন আগে ছুটিতে আসছে আসার আগে ব্যাংক থেকে ঋণ করে ঘর করে অনেক লেনা দেনা শোধ করতে অনেক টেনশনে ছিল। শেষ পর্যন্ত টেনশন থেকে চিরমুক্তি নিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন শাকিল।
নিহত কাওসারের মামা আজহার জানান, কাওসার বাবা হারা মায়ের এক মাত্র সন্তান। গত তিন বছর আগে তার বাবাও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। কাওসার ছিল পরিবারের একমাত্র সম্বল। মাকে দেখাশোনা করার আর কেউ রইলো না। নিহত মায়ের বাংলাদেশ সরকারের কাছে একমাত্র দাবী ছেলের লাশটি যেন দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
নিহত আল আমিনের বউ বিলকিস বেগম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের বিয়ে পাঁচ বছর হলেও তাদের ঘরে এখনো কোন সন্তান নেই। আল আমিন তাদের পরিবারের একমাত্র সম্বল। স্বামীকে হারিয়ে বিলকিস বেগমের পরিবারের চলছে সুখের মাতম।
বিলকিস বেগম আরোও বলেন, আমার স্বামীকে আর পাবো না কিন্তু আমার মৃত্য স্বামীর লাশটি যেন দেখতে পারি, আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমার স্বামীর লাশটি আমাদের কাছে ফিরে দিন। শেষবারের মতো যেন দেখতে পারি।
দুর্ঘটনার পর সৌদি রেড ক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ, সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল ডিফেন্সের জরুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নিহতদের উদ্ধার করে কিং আব্দুল আজিজ হাসপাতালে হিমঘরে রাখা হয়েছে।