আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
সেনাবাহিনীতে চাকরির নামে অর্থ আত্নসাৎ; আশুলিয়ায় ২ প্রতারক গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক চক্রের দুই জনকে আটক করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (২৫ মে) বিকালে সাভারের আশুলিয়া থানার নিরিবিলি এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
মঙ্গলবার(২৫ মে) রাত ১২ টার দিকে র্যাব ৪, সিপিসি ২ এর টহল কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুই জনই প্রতারক চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
র্যাব জানায়, সেনাবাহিনীর স্টেশন হেড কোয়াটার সিভিল অফিস সহায়ক পদে চাকরি নিয়ে দেবার বিনিময়ে ১০ লাখ টাকা চায় প্রতারকচক্র। শর্ত ছিল নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পূর্বে আট লক্ষ টাকা এবং নিয়োগপত্র পাওয়ার পরে বাকী দুই লক্ষ টাকা দিতে হবে। গত ১১ মে ভুক্তভোগী সবুজ মিস্ত্রী ৮ লক্ষ টাকা প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেয়। এরপরে প্রতারক চক্র সবুজ মিস্ত্রীকে ভুয়া সিলমোহর সম্বলিত নিয়োগপত্র দিয়ে জানায় তার চাকরি হয়ে গিয়েছে এবং বাকি ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। নিয়োগপত্র বাড়ি নিয়ে গিয়ে ভুক্তভোগী বুঝতে পারে যে সে প্রতারিত হয়েছে এবং নিয়োগপত্রটি ভুয়া।
ভুক্তভোগী সবুজ মিয়া(২২) পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার বাকশি গ্রামের সুধীর মিস্ত্রীর ছেলে। তিনি এইচএসসি পাশ করার পর দীর্ঘদিন বেকার রয়েছেন। তার বেকারত্বের সুযোগে প্রতারক চক্র ফাঁদে ফেলে তাকে। বাড়ির জমি ও গরু বিক্রি করে, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে এই টাকা প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেয় সবুজ মিস্ত্রী।
সবুজ মিস্ত্রী এজাহারে উল্লেখ করেন, বিভিন্নভাবে নিয়োগপত্রটি যাচাই করলে সেটি ভূয়া বলে প্রমাণিত হয়। পরে বাকি ২ লক্ষ টাকা চেয়ে প্রতারকরা সবুজকে আশুলিয়ায় এসে দেখা করতে বলে। সবুজ আশুলিয়ার নিরিবিলি এলাকায় এসে র্যাবের টহল টিমকে সামনে পেয়ে বিষয়টি জানান। পরে র্যাব ঘটনার বিস্তারিত শুনে সবুজকে সাথে নিয়ে প্রতারক চক্রের দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেক, এবং ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প সহ প্রতারণার ২১ হাজার ৩৭০ টাকা ও তিনটি মোবাইল জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হল, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার তিলছড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ওহিদুল ইসলাম ওরফে ওয়াহিদুজ্জামান(৫০) এবং একই এলাকার মৃত মকিম একিম সরদারের ছেলে এস এম শাহীন(৪৮)। পলাতক আসামীরা হল, রাজীব(৩২), শাহীন(৪৫), রাশেদ(২৭), সিরাজ(৫০) সহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা চক্রের পলাতকদের সম্পর্কে তথ্য দেয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার আশেপাশে চাকরিপ্রত্যাশী নিরীহদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল। সকলের বিরুদ্ধেই আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আল মামুন কবির জানান, প্রতারক চক্রের দুজনকে র্যাব আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করেছে। ভুক্তভোগীর সবুজ মিস্ত্রীর করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। চক্রের বাকিদের গ্রেফতার আইনের আওতায় আনতে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
/আরএম