জীবন-যাপন

সুন্দরভাবে কথা বলার কৌশল

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সুন্দর করে কথা বলতে না পারার কারণে অনেক সময় জীবনে পিছিয়ে পড়তে হয়। সুন্দর করে কথা বলাটা খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। শুধুমাত্র চর্চার বিষয়। আর একটুখানি নিয়মিত চর্চা আপনার জীবনকে দিতে পারে নতুন মোড় এনে। সুন্দর করে কথা বলা পুরোটাই যখন নিজের হাতে তখন নিজস্ব চেষ্টা, কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করলে সুন্দর করে কথা বলা হবে একবারেই সহজ!

নিজেকে বিশ্লেষণ করুন : আপনি কী বিষয়ে কথা বলছেন, কীভাবে কথাটি শুরু করছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন এবং তার সঙ্গে দেখতে হবে আপনার কণ্ঠস্বরটি কেমন। সেটি কি খুব বেশি কর্কশ, খুব মিষ্টি নাকি স্বাভাবিক। যেই বিষয় নিয়ে আপনি কথা বলছেন সেই বিষয়ে আপনার দক্ষতা কেমন এটি জানাও খুব জরুরি। এসব বিশ্লেষণের ফলাফল কাগজে লিখে রাখাই ভালো। সুন্দর করে কথা বলা পুরোটাই চর্চার ওপর নির্ভর করে।

আগে শুনুন, পরে বলুন : কোন একটা আলোচনায় যোগ দিতে গেলে আগে শুনুন কে কী বলছে। হুট করে কোন মন্তব্য করতে যাবেন না। এটা বোকামি। মূল বিষয়টি নিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করুন। কেউ যদি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করে তবে তাকে অনুসরণ করা যেতে পারে।

মতামত হবে সুস্পষ্ট : কখনোই এমন কোন কথা বলা উচিত নয় যেটিতে মানুষ খুব বিব্রতবোধ করে কিংবা বিষয়বস্তুর সঙ্গে একদমই খাপ খায় না। অন্যের কথার মাঝে কথা বলাটা খুবই অভদ্রতা। তবে কথা যদি বলতেই হয় সেটি ভদ্রভাবে বললে সবাই তাতে সাড়া দেবে। যেমন: “এক্সকিউজ মি”  বলে বক্তার কথার সঙ্গে যা যোগ করতে চাচ্ছিলেন কিংবা সেই বিষয়ে কোন ব্যক্তিগত মতামতও দেয়া যেতে পারে।

আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলুন : যা বলবেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলবেন। দ্বিধা নিয়ে কিছু বলা উচিৎ নয়। বক্তাকে দ্বিধান্বিত দেখলে শ্রোতারা বক্তার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। আর যা বলছেন, সেই কথাটি বলার সময় আত্মবিশ্বাসের কারণটিও বলা যেতে পারে।

চারপাশে খেয়াল রাখুন : পরিবেশ পরিস্থিতি সব সময় এক রকম থাকে না। তাই পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে কথা বলতে হয়। একটি আলোচনার ক্ষেত্রেও পরিবেশ পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়। কখনো হাসির সময় আসে আবার কখনো কঠোর সময় আসে কিংবা অনেক সময় অনেক গম্ভীর পরিস্থিতি তৈরি হয়। সব পরস্থিতিতে সব কথা মানায় না। নির্দিষ্ট সময়পোযোগী মন্তব্য করাই ভালো।

মূল বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখুন : কথা বলার সময়, সবসময় মূল বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেক সময় কথা বলতে বলতে বক্তা মূল বিষয় থেকে সরে পড়ে। তখন শ্রোতারা খুব বিরক্তবোধ করে। কারণ তারা তাদের মূল্যবান সময় গল্পে নষ্ট করতে চান না। প্রয়োজন হলে লিখে রাখতে পারেন যেটি নিয়ে কথা বলতে চান। তাহলে বক্তব্যগুলো মূল বিষয়ের মধ্যেই চলে আসবে।

বিরতি দিয়ে কথা বলুন : কথা বলার সময় একটু বিরতি দিয়ে কথা বললে শ্রোতাদের বুঝতে সুবিধা হয়। বেশি তাড়াতাড়ি কথা বলা খুব বাজে একটি অভ্যাস। এতে শ্রোতাদেরও বুঝতে কষ্ট হয়। বিরতি দিয়ে কথা বললে মূল বিষয়ের ওপর গুরুত্বও দেয়া যায়। অন্যদিকে ধীরগতিতে কথা বললে শ্রোতারা বিরক্তবোধ করে এবং শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সুতরাং, মধ্যবর্তী একটি মাপ বেছে কথা বললে শ্রোতাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়া যায়। কথা বলার সময় গুরুত্ব অনুযায়ী কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করা যেতে পারে।

চলিত ভাষায় কথা বলুন : যে ভাষা সবাই বুঝে সে ভাষাতেই কথা বলা উচিৎ। উচ্চারণ শুদ্ধ করলে কথা শুনতেও অনেক ভালো লাগে। সঠিক বাংলা উচ্চারণ করে তাক লাগিয়ে দেয়া যায়। খুব বেশি দরকার পড়লে উচ্চারণের ওপর কিছু কোর্সও করা যেতে পারে।

কোনো সূত্র অনুসরণ করা যেতে পারে : উচ্চারণ সুন্দর করতে কিংবা জ্ঞান আহরণে বিভিন্ন সূত্র বা উৎসব অনুসরণ করা যেতে পারে। যেমন: খবর, সিনেমা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।

বিভিন্ন রকম বই পড়ুন : জ্ঞান অর্জনে বইয়ের বিকল্প নেই। উচ্চারণ শুদ্ধ করতে বইয়ের কঠিন শব্দগুলো জোরে জোরে পড়ে অনুশীলন করা যেতে পারে।

/আরএইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close