ব্যাংক-বীমাশিল্প-বানিজ্য

সুদের হার বেশি হলে কখনোই শিল্পায়ন সম্ভব নয়: অর্থমন্ত্রী

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ টেনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকও ক্রাইসিসের সময় সুদের হার ঠিক করে দেয়। আমরাও সেভাবে করেছি।’

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেছেন, ‘সুদের হার বেশি হলে কখনই শিল্পায়ন সম্ভব নয়। তাই সুদের হার নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। তবে এ ক্ষেতে আরও সময় দিতে হবে।’

বণিক বার্তার আয়োজনে ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন ২০২০’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

ব্যাংক খাত নিয়ে অর্থনীতিবিদদের সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ খাতে নন-পারফর্মিং লোন বেশি। যা ঠিক করতে হবে।’

উচ্চ সুদের কারণে নন-পারফর্মিং লোন বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘ব্যাংকাররা ২০-২৮ শতাংশ হারে সুদ নিচ্ছেন এবং সুদের হিসাবও জটিলভাবে করা হচ্ছে। এভাবে কোনো উদ্যোক্তা ঋণ নিলে তা ফেরত দেবে কিভাবে? অনেকে ভিয়েতনামের শিল্পন্নোয়নের কথা বলেন। সেখানে সুদের হার মাত্র ৬ শতাংশ।’

মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সুদের হার বেধে দেয়া প্রসঙ্গে মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘অনেকেই বলেন, আমি মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাসী না, তা ঠিক নয়। আমাদের ব্যাংকিং খাতে লাগামহীন সুদের হার নিয়ন্ত্রণ করতে একটা সীমা বেঁধে দিয়েছি।’

যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকও ক্রাইসিসের সময় সুদের হার ঠিক করে দেয়। আমরাও সেভাবে করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুদের হার আমরা জোর করে চাপিয়ে দেইনি। সিস্টেমেটিক ওয়েতে করেছি। এ কাজে আমাদের সময় দিতে হবে। সুদের হার এখনই যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে আর কখনই সম্ভব নয়।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেভিং ইন্সট্রুমেন্টের সুদের হার পরিবর্তন গায়ের জোরে করা হয়নি। সিস্টেমেটিক উপায়ে করা হয়েছে। সেভিংস ইন্সুট্রুমেন্ট চালু করা হয়েছিল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য। কিন্তু অনেকে এ খাতে কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রে অটোমেশন পদ্ধতি চালু হওয়ায় আমরা জানি কারা এখানে কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, পোস্টাল সেভিংস ইন্সুট্রুমেন্টে কিছু দিনের মধ্যেই অটোমেশন করা হবে। এর ভিত্তিতেই পোস্টাল সেভিংস নিয়ে আমরা সিদ্ধান্তে আসবো বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

শেয়ারবাজার নিয়ে তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজার উঠবে কি নামবে এর তদারকি করা অর্থমন্ত্রীর কাজ না। আমি যা করছি তা হলো দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি উন্নয়নে কাজ করছি। আমি বিশ্বাস করি সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নতি হলে শেয়ারবাজারও ভাল অবস্থায় থাকবে।’

কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কর্মসংস্থান বাড়াতে আমাদের সময় দিতে হবে। এর জন্য আমরা ইকোনমিক জোন করছি। এগুলো প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যা যা প্রণোদনা প্রয়োজন দিচ্ছি।’

ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই রেশিও ৪০ শতাংশের বেশি হবে। কিন্তু আমরা শিল্পায়ন এবং অবকাঠামোর উন্নয়নে ট্যাক্স অব্যাহতি দিচ্ছি। এতে ট্যাক্স আদায় কম হচ্ছে। এই অব্যাহতি আমাদের কিছু দিন সহ্য করতে হবে। এরপর আর সমস্যা হবে না।’

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close