প্রধান শিরোনামসাভারস্থানীয় সংবাদ
সাভারে গণপিটুতিতে নারী হত্যার ঘটনায় আরও ৩ জন গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারের হেমায়েতপুরে ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনিতে সালমা বেগম (৪০) নামে এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় এক নারীসহ আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এনিয়ে মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে, এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা প্রায় ৭০০ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছিল।
মঙ্গলবার (৩০জুলাই) দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হলে দুই ব্যক্তি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবাববন্ধি দেয়। এর আগে সকালে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে সাভারের তেতুলঝোড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত শুকুর সরদার (৩০) খুলনা জেলার তেরগাদা থানার আকুলিয়া গ্রামের আবদুল হাফিজ সরদারের ছেলে। আরেকজন সজিব হাওলাদার (২৫) শরীয়তপুরের জাজিরা থানার বায়েরটাকি গ্রামের খোরশেদ হাওলাদারের ছেলে। তারা উভয়েরই বর্তমানে তেতুলঝোড়া এলাকায় থাকতো।
এছাড়াও পটুয়াখালি থেকে আটক করার পরে কাজল নামের নারীকে নিয়ে রওয়ানা হয়েছে সাভার মডেল থানা পুলিশের একটি দল। এর আগে, সাব্বির হোসেন (২০) এক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে এ মামলায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক ও ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. এমারৎ হোসেন জানান, ছেলেধরা গুজবে ওই নারীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাজল নামে নারী ওই নারীকে বেশি মারধর করে, যা ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় গত ২৫ জুলাই গ্রেফতার সাব্বির হোসেনও ঐ দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি দিয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (২০জুলাই) দুপুরে হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় একটি শিশুকে বিস্কুট খাওয়ানোর চেষ্টা করছিলেন এক নারী। এ সময় এলাকাবাসী ছেলেধরা গুজবে তাকে গণপিটুনি দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার ৪দিন পর বুধবার (২৪জুলাই) নিহত নারীর নাম সালমা বেগম (৪০) বলে জানায় স্বজনরা। নিহত সালমা বেগম মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার মুসলিমাবাদ গ্রামের বিল্লাল বেপারীর মেয়ে। মূলত, তিনি নিজের মেয়েকে দেখতে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। ১০-১২ বছর আগে স্বামী মিজানুর রহমান তাকে ডিভোর্স দিয়ে আবারও বিয়ে করে। সালমা ও মিজানুরের ঘরে তিন মেয়ে আছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর তিন মেয়ে মিতা, মনিকা ও মিসকাতকে নিজের কাছেই রেখে দেয় মিজানুর। ডিভোর্সের পর থেকে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার মুসলিমাবাদ গ্রামে বাবার বাসায় থাকতো সালমা।