প্রধান শিরোনামসাভারস্থানীয় সংবাদ
সাভারে কোটি টাকার কবরস্থানের পরিকল্পনা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রচন্ড মানুষের চাপে যেখানে আবাসস্থলেরই অভাব সেখানে শেষ সমাধিস্থল এর অভাব তো অনেক আগে থেকেই বোধ করে আসছেন নগরবাসী। বিশ্বায়নের এই যুগে কবরের স্থান নির্ধারণ করতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয় মানুষকে। সাভারের একটি সমাজসেবামূলক সংগঠনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বিশাল বড় কবরস্থান নির্মাণের। প্রায় ১ হাজার পরিবারের একান্ত প্রচেষ্টায় সাভারে এই কবরস্থান নির্মিত হতে যাচ্ছে।
জন্মিলে মরিতে হবে এই অকাট্য পরিণতি মেনে নিয়ে সকলকেই ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরকালের পথে যেতে হবে। ইহকাল আর পরকালের মাঝের মেলবন্ধনের সর্বশেষ ঠিকানা হল কবর বা সমাধি। জায়গার অভাবে অনেক পরিবারকে কবর দেয়ার সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই ভোগান্তিকেই ধুলিস্মাৎ করে দিতে কাজ শুরু করেছে সাভারের ‘জাগ্রত সোসাইটি’।
সাভার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তার বাসভবনে গত ১৪ অক্টোবর বিকেলে সানজিদা শারমিন মুক্তার সভাপতিত্বে কবরস্থান বাস্তবায়ন আহবায়ক কমিটির দুই সদস্যর নাম ঘোষণা করা হয়। আহবায়ক করা হয় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হাবিবুর রহমানকে এবং সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত হন মজনু একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন।
মনির হোসেন বলেন, সাভার পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডে ১০ শতক জায়গা নিয়ে একটি কবরস্থান আছে। কিন্তু ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে কোন কবরস্থান নেই। যদিও ১ নং ওয়ার্ডে কবর দিতে ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মানুষের কোন বাঁধা নেই তবুও অতিরিক্ত মানুষের চাপে বেশিদিন এভাবে চলা যাবেনা। এই সময়ে যদি আমরা কাজ শুরু না করি ভবিষ্যতে ১০ বছর পরে সমস্যা শুরু হয়ে যাবে।
আমাদের জাগ্রত সোসাইটি নামে একটি সংগঠন আছে। ৭ শত পরিবার এই সংগঠনের সদস্য। এই ৭০০ পরিবারের সাথে আশেপাশের বনপুকুর, সবুজবাগ, বাড্ডা, জালেশ্বর সহ বেশ কিছু এলাকায় যোগ হবে। কারণ তাদেরও নিজস্ব কোন কবরস্থান নেই। আমরা টার্গেট নিয়েছি ৭০০ পরিবারের সাথে আরও ৩০০ পরিবার যুক্ত করে ১০ হাজার করে টাকা করে নেওয়া হবে । এতে আমাদের টাকার পরিমাণ দাঁড়াবে ১ কোটি। ১ কোটি টাকা দিয়ে যতটুকু জায়গা কিনতে পারি কিনবো। এর মধ্যে যারা যারা যোগ হইতে পারে যোগ হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া এমন মহতী উদ্যোগে যে খুশি সেই শরিক হতে পারবেন, অনেক সমাজসেবক আছে তারা এগিয়ে আসলে আমাদের জন্য আরও সুবিধা হয়। কবরস্থান যত বড় হবে তত ভালো। ছোট জায়গা হলে সবকিছুতেই সীমাবদ্ধতা থাকবে। আমাদের বড় করারই ইচ্ছা আছে। সেখানে মূর্দার গোসল করানোর জায়গা রাখার চিন্তা ভাবনা আছে।
প্রয়োজনীয় টাকা পয়সার ব্যাপারে তিনি বলেন, টাকা জমা করার জন্য আমরা অর্থ কমিটি করেছি। ইতমধ্যে আমরা ৩-৪ টি মসজিদে গিয়েও কথা বলেছি। আমাদের ৩ টি মসজিদ মিলে যে সমিতি আছে সেখানে ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড মিলে ৭শত পরিবার। সকল মসজিদের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সহ শিক্ষিত তরূণদের নিয়ে এই কমিটি করা হয়েছে।
এছাড়া আরও ৫০ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটিও তৈরী করা হয়েছে। এর উপদেষ্টা কমিটির প্রধান হলেন সাভার পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গণি। ৩ টি সাব কমিটি করে কাজগুলো ভাগ করে দেয়া হয়েছে। যারা কেউ কাজ করবে অর্থ নিয়ে, কেউ স্থান নির্বাচন নিয়ে আর বাকিরা প্রচার প্রচারণা নিয়ে।
সাভার পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গণি বলেন, কবরস্থানের কাজ সমাপ্ত করার জন্য আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে। যদি সরকারিভাবে পৌরসভা থেকে সহায়তা করার সুযোগ থাকে আমি সেটাও চেষ্টা করব। একটা মানুষের শেষ ঠিকানা কবরস্থান। মৃত্যুর আগেই নিজের শেষ ঠিকানার ব্যবস্থা নিজেকেই করে রেখে যেতে হয়। জাগ্রত সোসাইটির এমন মহৎ উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।