সাভারস্থানীয় সংবাদ
সাভারে করোনায় সরকারি কর্মকর্তার মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারে করোনায় (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আনোয়ার হোসেন নামে এক সরকারি কর্মকর্তা মারা গেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার (১৪ জুন) রাতে তিনি মারা যান।
মারা যাওয়া ব্যক্তি আনোয়ার হোসেন (৫৫) সাভার উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কমিউনিটি অর্গানাইজার পদে কর্মরত ছিলেন। বাড়ি সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনি মহল্লায়।
উপজেলা প্রকৌশলী সালেহ হাসান প্রামাণিক বলেন, কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন। এ ছাড়া তাঁর কার্যালয়ের আরও সাত কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে বাড়িতে আইসোলেশনে (বিছিন্ন) রয়েছেন।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিন পনেরো আগে আনোয়ার হোসেন জ্বরে আক্রান্ত হন। ৩ জুন থেকে তাঁর শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। এ অবস্থায় ৬ জুন তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের (আইসিইউ) সুবিধা না পেয়ে ৮ জুন তাঁকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এর আগে ওই হাসপাতালে পরীক্ষা করে তাঁর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত আটটার দিকে তিনি মারা যান।
আনোয়র হোসেনের শ্যালক আব্দুস সাত্তার বলেন, এনাম মেডিকেলের করোনা ইউনিটে রোগীর প্রতি চিকিৎসকদের দায়িত্ব ও আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। প্রয়োজনের সময়ে তাঁদের (চিকিৎসক) খুঁজে পাওয়া যায় না, যা তাঁর ভগ্নিপতির ক্ষেত্রে হয়েছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দেওয়ার পরেও পরীক্ষার জন্য তাঁদের কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া চিকিৎসা বাবদও নেওয়া হয়েছে অনেক টাকা। ধারদেনা করে ওই টাকা জোগাড় করতে হয়েছে।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ৬ জুন থেকে এনাম মেডিকেলে ১২০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে আইসিউর শয্যা রয়েছে ২০টি। এর আগে চালু করা হয় পিসিআর ল্যাব। তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য করোনা ইউনিটে ১২০ জনের একটি দল কাজ করে যাচ্ছে, যাদের ৪৫ জনই চিকিৎসক। কয়েক গুণ বেশি টাকা বেতনে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব চিকিৎসক দায়িত্ব নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে ডা. এনামুর রহমান বলেন, সরকারনির্ধারিত ল্যাব ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকার সঙ্গে নমুনা সংগ্রহের জন্য আরও ১ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা খরচ বাবদ অন্য বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় অনেক কম টাকা নেওয়া কথা জানান তিনি।
কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে সাভারে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২২ জন।