প্রধান শিরোনামসাভারস্থানীয় সংবাদ
সাভারের গোলাপ বাগানে অজানা ছত্রাকের হানা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাভারের গোলাপ বাগানে অজানা ছত্রাকের হানা। ঝরে পড়ছে গোলাপের কুঁড়ি। মরে যাচ্ছে গাছ। ভরা মৌসুমে প্রকৃতির এই নিষ্ঠুরতায় দিশেহারা ৮ শতাধিক গোপলচাষি। পরস্পরকে দুষছেন চাষি ও কৃষি অফিস।
করোনার আঘাত কাটতে না কাটতেই সাভারের ফুলক্ষেতে এবার হানা দিয়েছে অজানা এক ছত্রাক। অথচ এ মাসেই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এসব দিবস ঘিরে ফুলচাষিরা স্বপ্ন দেখলেও এবার হাসি নেই সাভারের গোলাপচাষিদের মুখে।
৯০-এর দশকে গোলাপ চাষে ভাগ্য বদলে যায় সাভারের বিরুলিয়া গ্রামের মানুষের। পরিচিতি পায় ‘গোলাপ গ্রাম’ নামে। গোলাপের অপরূপ রূপ দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ফুলপ্রেমীরা। ফুলের হাসিমাখা গ্রামটিতে এখন হাসি নেই। বাগানের পর বাগানের ফুল ঝরে গেছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে কাজ হয়নি, অভিযোগ চাষীদের।
এক গোলাপচাষী বলেন, আমার ৬০ শতাংশ ক্ষেত এই ভাইরাসে নষ্ট হয়ে গেছে। এই ভাইরাসে আমারা অনেক লোকাসানের মধ্যে আছি, এই ভাইরাসে ফুলের কলি পচে যায়, পাতা ঝরে পরে যায়। গাছের মুল নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি কর্মকর্তাদের জানানোর পর ওনারা আসছে এবং মাটি পরিক্ষা করছে, কিন্তু এই বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা কোন ফলাফল দিতে পারে নাই। কৃষি কর্মকর্তারা আমাদের বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করার কথা বললেও তাতে কোন লাভ হয় নাই।
এরই মধ্যে গোলাপ গ্রাম ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করেছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিকভাবে মিলেছে পাউডারি মিলডিউ নামে ছত্রাকের উপস্থিতি। তবে মাটিসহ আরো নমুনা পরীক্ষার পর জানা যাবে বিস্তারিত। আর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ না করায় কেউ কেউ ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি এই কৃষি কর্মকর্তার।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোজ্জামেল হক জানান, যখন আমরা গোলাপের ছত্রাকজনিতো সমস্যা দেখি তখন আমরা আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর আমরা মাটি নিয়ে গবেষনাগারে পরিক্ষা করার পর জানা যায় ছত্রাকজনিত সমস্যার কারনেই গোলাপ ফুলগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের ধারনা বিভিন্ন কোম্পনির কিটনাশক ব্যবহার করা এবং গত ডিসেম্বরে যে বৃৃষ্টি হইছে সেই বৃৃষ্টির পানি দির্ঘ সময় গাছের গোড়ায় থাকার কারেন ফুলগুলো নষ্ট হয়।
গোলাপগ্রামে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী আখি বলেন, গত বছরের তুলনায় বাগানে ফুল নাই বললেই চলে। আগে দুপাশে অনেক ফুল দেখলেও এবার তুলনামুলক ভাবে গোলাপ ফুল অনেক কম। ফুল কম হওয়ায় ফুলের দামটাও একটু বেশি। আগে আমরা এইখানে প্রতি পিস ৩ টাকা করে কিনলেও এবার প্রতি পিস ফুলের দাম ১০ থেকে ১২ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
ছত্রাকের কারণে আড়াইশ’ হেক্টর জমির প্রায় ১৯ কোটি টাকার গোলাপ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
/এন এইচ