প্রধান শিরোনামসাভারস্থানীয় সংবাদ
সাভারের ইউনিয়ন পর্যায়ে ১২টি কেন্দ্রে দেয়া হবে করোনার টিকা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাভারের ইউনিয়নগুলোর ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের জন্য করোনার ভ্যাক্সিন বরাদ্দ হয়েছে দিনপ্রতি ২০০ ডোজ। পুরাতন ১টি ওয়ার্ডে(বর্তমানের ৩ টি ওয়ার্ড প্রতিটিতে ২০০ করে) মোট ৬০০ জন ইউনিয়ন পর্যায়ে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আসবে। এভাবে ৩ দিনে পুরোনো ১ ওয়ার্ডে ১৮০০ জন পাবেন করোনার টিকা। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগের মত করে টিকাদান তো চলবেই। সাভারের ১২টি টিকাকেন্দ্রে থাকবে ৩৬টি বুথ।
০৭ আগস্ট, শনিবার সাভারের ১২ টি ইউনিয়নে এক যোগে চলবে ভ্যাক্সিনেশন। সাভারের ইউনিয়নগুলো হল, শিমুলিয়া, ধামসোনা, পাথালিয়া, ইয়ারপুর, আশুলিয়া, বিরুলিয়া, সাভার, তেঁতুলঝোড়া, বনগাঁও, আমিনবাজার, কাউন্দিয়া, ভাকুর্তা। সাভারের ইউনিয়নগুলোতে বরাদ্দের ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাঃ সায়েমুল হুদা বলেন প্রত্যেক পুরাতন ওয়ার্ডের জন্য ৬০০ করে ৩ দিনে ১৮০০। এটাই বরাদ্দ। এর বেশি দেয়া যাবেনা। এটা ফিক্সড করা। এর পরের ধাপগুলোও এভাবেই আগাবে। আমাদের রুটিন সকল কার্যক্রম বজায় রেখেই এই অতিরিক্ত কাজ করতে হবে।
সাভারের মত এমন জনবহুল উপজেলায় টিকাদান নিয়ে বিশৃংখলা ও হট্টগোলের সৃষ্টির আশংকা রয়েছে। সাভারে আয়তনে সবচেয়ে ছোট ইউনিয়ন হল বিরুলিয়া ইউনিয়ন। ১০ দশমিক ২০ বর্গকিমি আয়তনের এই ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২৬ হাজারের ওপরে। সেহিসেবে ৩ ধাপে এই ইউনিয়নের মাত্র ১৮০০ জন পাবেন ইউনিয়ন পর্যায়ের ভ্যাক্সিন। বাকিদের পূর্বের ন্যায় সাভার উপজেলা থেকেই নিতে হবে ভ্যাক্সিন। জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে ছোট ইউনিয়ন হল কাউন্দিয়া ইউনিয়ন। সেখানেও ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি। ছোট ইউনিয়ন গুলোতেই যদি বরাদ্দের তুলনায় এত বিশাল সংখ্যার ভোটার থাকে তাহলে বড় ইউনিয়নগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ।
সাভারের সবচেয়ে জনবহুল ইউনিয়ন ধামসোনা ইউনিয়ন, যেখানে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭১ হাজারের বেশি। এমন ইউনিয়নগুলোতেও ভ্যাক্সিনের জন্য রয়েছে একই বরাদ্দ।
টিকাকেন্দ্রে বাড়তি চাপ
বাড়তি চাপ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৮ বছরের উর্দ্ধে যাদের ভোটার আইডি কার্ড আছে রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে কেবল তারাই পাবেন টিকা। এর বাইরে টিকাকেন্দ্রে ভিড় করে তো লাভ নেই। আর আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবারই আবেদন করেছি ইউনিয়ন পর্যায়ে ভ্যাক্সিন এর পরিমাণ বাড়ানোর জন্য। তবুও সারাদেশের ন্যায়ই আমরা বরাদ্দ পেয়েছি। আর এটা তো ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রমের জন্য ক্যাম্পেইন বলা যায়। কারণ উপজেলায় আমাদের মূল টিকাদান তো চলবেই। তাই ইউনিয়ন পর্যায়ে বরাদ্দ কম ভেবে আতংকিত হবার কিছু নেই।
টিকাকেন্দ্রের নিরাপত্তা সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সায়েমুল হুদা বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে আলোচনা করে টিকাকেন্দ্রের স্থান ঠিক করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন। তাই আশা করছি বিশৃংখলা হবেনা। এছাড়া আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথেও কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যোগাযোগ করেছি।
জনবলের অভাব
এতগুলো ইউনিয়নে একত্রে ভ্যাক্সিনেশন করতে অভাব হতে পারে জনবলের। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়া তথ্য মতে ১২ টি ইউনিয়নের ৩৬ টি টিকাকেন্দ্রে ৩ টি করে বুথ থাকবে। অর্থাৎ বুথগুলোতে টিকা দেয়া এবং সার্বিক কার্যক্রম দেখভাল করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের। এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সায়েমুল হূদা বলেন, গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল, মা ও শিশু কেন্দ্র হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি টিম একসাথে ক্যাম্পেইনে কাজ করবে। প্রতিটি কেন্দ্রে আমাদের ইমারজেন্সি টিম থাকবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোও এম্বুলেন্স সহায়তা দিবে।
উল্লেখ্য প্রতি ইউনিয়নে ৯টি করে ওয়ার্ড থাকায় সাভারের ১২ টি ইউনিয়নে বর্তমানে ওয়ার্ডের সংখ্যা ১০৮ টি। তবে পূর্বের ন্যায় ৩ টি করে ওয়ার্ড ধরে মোট ৩৬ টি ওয়ার্ডের হিসেবে ৩৬ টি বুথে টিকা দেয়া হবে। এখানে পূর্বের ১ টি ওয়ার্ড মানে বর্তমানের ৩ টি ওয়ার্ড। আগামী ৭ আগস্ট ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদানের বিশাল কর্মযজ্ঞকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্ট সকলে।
/আরএম