দেশজুড়ে
সাবেক মন্ত্রীর এপিএস নূর খানের সম্পদের পাহাড়, অভিযোগ দুদকে
নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের এপিএস নূর খানের বিরুদ্ধে।
নূর খানকে গত বছরের আলোচিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হওয়া গণপূর্তের ঠিকাদার জিকে শামীমের সহযোগী দাবি করে তার সাথে সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমান অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ দাখিলের তথ্য পাওয়া গেছে।
গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এই অভিযোগটি গ্রহণ করেছে দুদক। দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, নূর খান সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রীর পিও হিসেবে যোগদানের পর এপিএস হিসেবে পদোন্নতি পান। এ সময় মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে জিকে শামীম, পিএইচডাব্লিউ-এর সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকসহ একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। এছাড়া মন্ত্রীর প্রভাব কাজে লাগিয়ে তদবির বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য ও প্লট বাণিজ্যের অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগপত্রে নূর খানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কাতালগঞ্জে সিপিডিএলের প্রজেক্টে তার নামে এবং তার ভাগ্নের নামে দুটি ফ্ল্যাট, জিইসি সার্কেলে লাজ ফার্মা নামে একটি ফার্মেসি, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি দোকান, হাটহাজারীর উত্তর মাদ্রাসায় বােয়ালীকুল, হাটহাজারীর বড় দীঘিপাড়, সীতাকুণ্ডে বিপুল পরিমাণ জমি ও পূর্বাচলে ৫ কাঠার একটি প্লট থাকার কথা উল্লেখ করে এসব নূর খানের আয়ের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে দাবি করা হয়েছে।
এছাড়া দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে জিকে শামীম গ্রেফতার হওয়ার পরে দুবাইতে হুন্ডির মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও করা হয়েছে ওই অভিযোগপত্রে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রীর এপিএস নূর খানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, দুদকে অভিযোগ দাখিলের বিষয়ে কিছুই জানা নেই তার। দুদক জমা দেওয়া ওই অভিযোগপত্রের অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কোন কথা বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযানে গত ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নিকেতনের নিজ কার্যালয় জিকে বিল্ডার্স ভবন থেকে জিকে শামীমকে আটক করে র্যাব। জিকে শামীমের ব্যবসায়িক কার্যালয় থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার এফডিআর চেক ও নগদ ১০ কোটি অর্থ উদ্ধার করে র্যাব। সে সময় গণপূর্তের ঠিকাদারির মাধ্যমে বিপুল পরিমান অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল শামীমের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছিল জিকে শামীমের নেতৃত্বাধীন একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হতো গণপূর্তের সব ঠিকাদারি কার্যক্রম। এই সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে বারেবারেই উচ্চারিত হচ্ছিল নূর খানের নাম।
/এএস