দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
সাংবাদিকদের ছাত্রলীগ কর্মীরা বাধা দিলে ব্যবস্থা: ছাত্রলীগ সভাপতি
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অতি উৎসাহী হয়ে সাংবাদিকদের যদি ছাত্রলীগ কর্মীরা বাধা দেয় তাহলে তাদের (ছাত্রলীগ কর্মী) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষ ও এ পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে আল নাহিয়ান খান জয় এসব কথা বলেন।
একই সঙ্গে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিকদের সহযোগিতার করার প্রতিশ্রুতি এবং এ বিষয়ে সারা দেশে ছাত্রলীগের সব ইউনিটের নেতা কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় ছাত্রলীগের পক্ষে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রাকিব হোসেন ও সৈয়দ আরিফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মামুন তুষার, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসিফ হাওলাদার, অর্থ সম্পাদক মাহাদী হাসানসহ সমিতির অন্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘সাংবাদিকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রলীগ অবশ্যই সাংবাদিকদের সহযোগিতা করবে, সাংবাদিকরাও ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করবেন। আমরা একে অপরের শত্রু নই। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, যদি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে, তবে আমরা আমাদের নেতা কর্মীদের নির্দেশনা দেব, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে অতি উৎসাহী হয়ে এ রকমের কোনো ঘটনা ঘটায়, তাহলে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটুক, এটা আমরা কেউই চাই না। কেননা, আমরা এখানে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ভাই-ভাই।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে যথাযথ ব্যবহারের জন্য নেতা কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা তাদের নিজের মত কাজ করবে, সাংবাদিকেরা তাদের কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিরূপ আচরণের কোনো সুযোগ নেই।’
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আল নাহিয়ান খান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সহাবস্থান না থাকার যে কথা বলা হচ্ছে, তা মিথ্যা। দীর্ঘদিন তারা (ছাত্রদল) মধুর ক্যানটিনে বসেছে, রাজু ভাস্কর্যে তাদের কর্মসূচি পালন করেছে। আমাদের নেত্রীকে নিয়ে খারাপ কথা বলার পর কিন্তু আমরা কথা বলেছি। এই মন্তব্য কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মেনে নেয়নি। দীর্ঘদিন সহাবস্থানে থাকার পর ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর কী এমন এজেন্ডা তারা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রীকেই নিয়ে খারাপ মন্তব্য করার ধৃষ্টতা দেখাতে হবে?’
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর সবাই ছাত্রলীগ করে না, তবুও তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে করা এমন বক্তব্য মেনে নেয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি ছাত্রদলের গুন্ডা অছাত্রদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করে, তাহলে আমরা বলেছি, আমরা তাদের পাশে থেকে তাদের প্রতিরোধ করব। আমরা বলেছি, ছাত্রদল যে মন্তব্য করেছে, তার জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। যদি তারা ক্ষমা চায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি তাদের ক্ষমা করে দেয়, তবে আমরাও তাদের স্বাগত জানাব।’
সভায় সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে যেন শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকে। এ বিষয়ে আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাদের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করি।’
/আরএম