আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
সমুদ্র বন্দর দিয়ে পণ্য ট্রানজিট, আঞ্চলিক বাণিজ্যে নবদ্বার উন্মোচন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ এই প্রথম বাংলাদেশ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পৌঁছানোর জন্য বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয়। মংলা এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের ট্রানজিটের সুযোগ দেয়ার ফলে কোলকাতা থেকে আসাম হয়ে আগরতলা পর্যন্ত দূরত্ব যেখানে পূর্বে ছিল ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। সেটি এখন মাত্র ৪৫০ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে সহজে পণ্য পরিবহণের জন্য ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম এবং মংলা সমুদ্রবন্দরকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। এমনি করে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিবিআইনএন বা বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপালের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান নৌ-প্রটোকল চুক্তি ‘প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিঅ্যান্ডটি)’-এর কিছু সংযোজনসহ নৌ-প্রটোকল চুক্তির দ্বিতীয় এডেনডাম গত ২০ মে ঢাকায় স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে ‘পোর্টস অব কল’ এবং দুটি বন্দর বাড়ানোর কথা বলা হয়। দুটি দেশেই এখন ১১টি পোর্টস অব কল রয়েছে। এর মধ্যে আসামের জগিগহোপার নতুন পোর্টস অব কল মেঘালয় এবং ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশে সমুদ্রবন্দরের যোগাযোগ বিবিআইএন গঠনের জন্য একটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এই ট্রানজিটের সুযোগ ভুটানকেও বিবিআইএন মোটরযান চুক্তি যেটি আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে করার কথা ছিল সেটিকে সমর্থন করতে অনুপ্রেরণা দিবে।
বিবিআইএন অঞ্চলে যোগাযোগ স্থাপনের একটি যৌথ প্রজেক্টে অনেকগুলো মডেল বাস্তবায়ন জন্য কাজ করছে ভারতের সিইউটিএস ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ উন্নয়ন সমন্বয়, ভুটানের মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন ইন্সটিটিউট এবং নেপালের ইকোনমিক ফোরাম। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কোলকাতা থেকে আগরতলা এবং করিমগঞ্জ পণ্য পরিবহণের পর এই চার সংস্থা বিবিআইএন’র মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বেশ কয়েকটি মডেল নিয়ে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে।
এ নিয়ে ভারতের সিইউটিএস’র নির্বাহী পরিচালক বিপুল চ্যাটার্জি বলেন, সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশ। ভুটান, ভারত, নেপাল বুঝতে পেরেছে যে বাণিজ্যের পূর্ব শর্ত হলো যোগাযোগ স্থাপন। আর্থ-সামাজিক এবং পরিবেশগত ব্যয় এবং সুবিধার কার্যকরী ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য রাজনৈতিক গতিবেগ জন্য তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি খাত এবং স্থানীয় সরকারদের এই সহযোগিতার মূল্য জনগণকে বোঝাতে হবে।
ওই বৈঠকে ইন্টিগ্রেটেড ডেভলোপমেন্ট স্টাডিজের প্রধান স্বর্নিম ওয়াগল বলেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে ব্যবসা বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ স্বাভাবিক করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি টেকসই উপায়ে জনগণের মধ্যে সংযোগস্থাপনে করাতে হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সেলিমা আহমাদ বলেন, এই উপ অঞ্চলের দরিদ্রতা এবং স্থিতিশীলতা ধরে রাখার জন্য সংযোগস্থাপন একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
ভারতের অতুল বিহারি বাজপেয়ী ইন্সটিটিউট অব পলিসি রিসার্চ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের পরিচালক শক্তি সিনহা বলেন, এই উপ-অঞ্চলের চ্যালেঞ্জগুলি শনাক্ত করতে এবং সমাধান করার জন্য একটি বর্ধিত পদ্ধতি অবলম্বন করা অপরিহার্য।
বৈঠকে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের মহাপরিচালক রাজীব সিং বলেন।, বিবিআইএন গ্রুপ দেশগুলোর পরস্পর সহযোগিতার সফলতার গল্পগুলো অবশ্যই তুলে ধরতে হবে। সরকারের পর্যায় থেকে এই পারস্পরিক সংযোগস্থাপন করতে চাইলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কারণে তা বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জের।
/এন এইচ