বিশ্বজুড়ে
সমুদ্রের পানিতে ভেসে যেতে পারে কলকাতা!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে উষ্ণায়ন ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে, তা সবারই জানা। বিশ্বের সব রাষ্ট্রনেতারা এই আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে বৈঠকের পর বৈঠক করেও তেমন কোনও সমাধান সূত্র খুঁজে পাচ্ছেন না। হয়ত একদিন এই উষ্ণায়নের জেরেই মানবজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। তাই যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সতর্ক করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
এবার সমানে এল জাতিসংঘের একটি রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্তত ৪৫টি শহর রয়েছে রিস্ক জোনে। অর্থাৎ বরফ গলার জেরে এরা সমুদ্র সংলগ্ন অঞ্চলে থাকায় জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সেই ৪৫টি শহরের মধ্যে রয়েছে ভারতের চারটি- কলকাতা, মুম্বাই, সুরাত ও চেন্নাই। ওই রিপোর্ট বলছে হিমালয়ের বরফ যে হারে গলছে, তার জেরেই বিপদসীমায় রয়েছে এই শহরগুলো।
এর আগে এভাবে সমুদ্রের পানি বাড়তে দেখা যায়নি। জাতিসংঘের ওই রিপোর্ট বলছে পানির স্তর বৃদ্ধির জেরে এই শতাব্দীর শেষে ১৪০ কোটি মানুষের উপর এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে। জাতিসংঘ ওই রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর)।
রিপোর্ট বলছে, যদি সমুদ্রের পানি ৫০ সেন্টিমিটার করেও বাড়ে, তাহলেই ওই ৪৫টি শহর ভেসে যাবে। আরও বলা হয়েছে, আগে ১০০ বছরে একবার সমুদ্রের পানির স্তর বাড়তে দেখা যেত। বছর কয়েক পর থেকে প্রত্যেক বছর একটু একটু করে পানির স্তর বাড়তে দেখা যাবে।
সতর্ক করে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এভাবে চলতে থাকলে, সামুদ্রিক প্রাণীদের মৃত্যু বাড়তে থাকবে। আর ধ্বংসাত্মক সাইক্লোনের পরিমাণও বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সতর্ক না হলে ৬০ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার বেড়ে যাবে পানির স্তর। প্রত্যেক বছর ৩.৬ মিলিমিটার করে বাড়ছে বলে জানা গিয়েছে।
রিপোর্ট বলছে, ২১০০ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ৩.৫ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। তবে সেই সঙ্গে রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে, বিষাক্ত গ্যাসের নিগর্মন কমলে মানুষের জীবনযাপন হয়ত একটু কঠিন হবে, তবে জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।
এর আগেও ওয়ার্নিং দেওয়া হয়েছে কলকাতাকে। ২০১৫ সালে ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে সতর্কবার্তাই দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ করা হয়েছিল, যদি বিশ্বের তাপমাত্রা আর ৪ ডিগ্রি বাড়ে, তাহলে ভারতের উপকূলবর্তী এলাকার প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ জলের তলায় ভেসে যাবে। চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার অর্ধেক সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। কলকাতা, হাওড়া, মুম্বাইয়ের মত শহরগুলো ভারতের মধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল।