কৃষিশিল্প-বানিজ্য
সমতল ভূমিতে চাষ হচ্ছে দার্জিলিং কমলা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ঝিনাইদহের মহেশপুরে সমতল ভূমিতে চাষ হচ্ছে দার্জিলিং কমলা। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এই কমলা চাষ দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে দিতে পারলে কমলা আর আমদানি করতে হবে না, বরং তা রপ্তানিও করা যাবে।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামের নার্সারি মালিক রফিকুল ইসলাম দুই বছর আগে দার্জিলিং ঘুরতে গিয়ে সেখান থেকে কিনে আনেন দুইশ’ দার্জিলিং কমলার চারা। শুরুতে সমতল ভূমিতে এই সুস্বাদু কমলা হবে কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল তার। তবে ফলন আসার পর দেখা যায়, সেগুলো খোদ দার্জিলিং কমলার চেয়েও বেশি মিষ্টি আর বড় হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ’চারা কেনার সময় আমাকে বলেছিলো এটা দার্জিলিং কমলা। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমাদের দেশে কি হবে? বলল, ভগবান জানে। এনে মাল্টার গাছের ফাঁকে ফাঁকে লাগালাম।”
সফল কমলা চাষী রফিকুলের ১২০টি কমলা গাছের থেকে বিক্রি হয়েছে দুই লাখ টাকা। আরো দুই লাখ টাকার কমলা রয়েছে বাগানে। এছাড়া বাগানে কলম দিয়ে প্রস্তুত করেছেন ৩০ হাজার কমলার চারা। আরো দুই লাখ চারা শেডে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকারভেদে সেগুলো বিক্রি হবে দুইশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকা করে।
দার্জিলিং জাতের কমলা দেখতে এবং কমলার চারা কিনতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রফিকুলের বাগানে আসছেন ব্যবসায়ী ও সৌখিন মানুষেরা। সেই সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারাও আগ্রহী হচ্ছেন এই কমলা চাষে। স্থানীয় কৃষি অফিস সহযোগিতা করছে এই কমলা চাষীকে। সেইসঙ্গে সারাদেশে এই জাতের কমলা ছড়িয়ে দিতে কাজ শুরু করেছেন তারা।
ঝিনাইদহের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল কবির পল্লব বলেন, “কখন কোন সার লাগবে, কখন কোন রোগবালাইয়ের প্রতিকার লাগবে, কখন সেচ লাগবে সেটা আমরা বিস্তারিতভাবে তাকে জানিয়ে দিয়েছি। যতোভাবে সহযোগিতা লাগে আমরা তা করছি।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতে উন্নত জাতের কমলা আর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, “মহেশপুরে সুন্দরভাবে এই কমলার চাষ হয়েছে। আমাদের দেশও কমলা চাষের জন্য উপযোগী। আমরা যদি এই চাষটা সম্প্রসারিত করতে পারি তাহলে কমলা ভবিষ্যতে আমাদের দেশে আমদানি করতে হবে না, বরং আমরা কমলা রপ্তানি করব।”
/এএস