দেশজুড়ে

সনদ ছাড়াই দাবি করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ নামের সুবাদে সনদ ছাড়াই গাইনি চিকিৎসক হিসেবে দুই যুগ ধরে রোগী দেখছেন ‘ডাক্তার’ জোহরা আক্তার। তবে নামই তার ‘ডাক্তার। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি অন্তত শতাধিক রোগী দেখেন তিনি। প্রসূতি মায়ের চিকিৎসার পাশাপাশি নারীদের সব সমস্যায় রোগী ভিজিট, আল্টাসনোগ্রাফী, সন্তান প্রসব করিয়ে রীতিমতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করেন জোহরা আক্তার। এছাড়া অনাকাঙ্খিত ভ্রুণ গর্ভপাত করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে এর মধ্যে কোটিপতি বনে গেছেন সনদহীন ওই চিকিৎসক। তবে নারী রোগীদের গাইনি চিকিৎসা দিয়ে বেশ খ্যাতিও ছড়িয়েছেন কুমিল্লার চান্দিনা ও দেবীদ্বারসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়।

সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন সংলগ্ন ‘মা-মনি মেডিকেল সেন্টারে’ গিয়ে দেখা যায় অনেক নারী রোগীর ভিড়।

নারী রোগীরা কার কাছে এসেছেন জানতে চাইলে তারা জানান, আমরা জোহরা ডাক্তারের কাছে এসেছি। কৌতূহলবশ এই প্রতিবেদক ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিচ তলায় গিয়ে দেখেন, একটি কক্ষে রোগী দেখছেন জোহরা আক্তার। প্রায় আধাঘণ্টা পর সনদহীন ওই চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা প্রতিবেদকের। এ সময় তিনি কোনো মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করেছেন এমন প্রশ্নে সদুত্তর দিতে পারেননি ‘ডাক্তার’ জোহরা আক্তার। ‘ডাক্তার’ হিসেবে তার নেই এমবিবিএস পাশের সনদ। পরে তিনি দেখান কুমিল্লা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের একটি সনদপত্র। ওই সনদেও নেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর।

তারপরও ‘ডাক্তার’ লিখেন কীভাবে? এমন প্রশ্নে তিনি সোজা-সাপটা উত্তর দেন, ‘আমার নামই ডাক্তার’! ডাক্তার আবার নাম হয় কীভাবে? এমন প্রশ্নে তিনি বের করে আনেন নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্ট কার্ড। সেখানে লিখা আছে ‘ডা. জোহরা আক্তার’!

জানা যায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার বাসিন্দা জোহরা আক্তার ১৯৯৯ সাল থেকে প্রাইভেট হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০২ সাল থেকে নিজেকে এমবিবিএস (গাইনি) চিকিৎসক দাবি করে শুরু করেন চিকিৎসাসেবা। এরপর কেটে গেছে দুই যুগ। এছাড়া অনাকাঙ্খিত ভ্রুণ গর্ভপাত করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে এর মধ্যে কোটিপতি বনে গেছেন সনদহীন ওই চিকিৎসক।

কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close