দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে খুনের অভিযোগ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় রাসেল চৌধুরী (২৪) নামে এক ব্যক্তিকে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। পুলিশ বলছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী ও শ্বশুরসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।

নিহত রাসেল চৌধুরী কসবা উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মিজানুর রহমান চৌধুরীর ছেলে। আটককৃতরা হলেন একই গ্রামের বাসিন্দা রাসেল চৌধুরীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২২), তাঁর বাবা মো. ওয়াদুদ মিয়া (৭০), স্ত্রীর বড় ভাই মো. রুবেল মিয়া (২৮) ও অন্য এক ভাইয়ের স্ত্রী রহিমা বেগম (৩০)। আটককৃতরা থানা হাজতে রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তারা।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাসেল মিয়া ও ফাতেমা বেগম একই গ্রামের বাসিন্দা। তারা পাঁচ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। তাদের এ বিয়ে কোনো পরিবারই মেনে নেয়নি। বিয়ের পর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। আলতাজ চৌধুরী নামে তাদের চার বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। ফাতেমা থাকতেন তার বাবার বাড়িতে এবং রাসেল ঢাকায় উবারে মোটরসাইকেল চালক হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশের ভাষ্য, ঈদ করতে বাড়িতে আসেন রাসেল মিয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া করে বাড়িতে চলে আসেন। গভীর রাতে তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম তাকে মুঠোফোনে বাড়িতে ডেকে নেয়। সেখানে গেলে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে খুন করে রাসেলের লাশটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। সে সময় রাসেলের বাড়ির লোকজন চিৎকার করে তাকে খুঁজতে থাকে।

খবর পেয়ে আজ শুক্রবার সকালে কসবা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেছে। এ সময় শ্বশুরবাড়ির একটি ড্রাম থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি ও রুবেলের একটি মোবাইল সেট উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ রাসেলের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, শ্বশুর ওয়াদুদ মিয়াসহ চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

কসবা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক হোসেন বলেন, নিহতের মাথায় ও গলায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তা ছাড়াও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের দাগ রয়েছে। তিনি বলেন, ভালোবেসে বিয়ের পর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। রাতের বেলায় স্ত্রী ফাতেমা বেগম তাকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে খুন করে লাশটি গুম করার উদ্দেশ্যে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে তারাই লাশটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী ও শ্বশুরসহ চারজনকে একটি রক্তমাখা ছুরিসহ আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না তাও তদন্ত করা হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close