দেশজুড়ে
শেখ হাসিনায় মানুষের আস্থা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মহীনতা ও বন্যার ক্ষতি মোকাবেলায় বাড়তি দুশ্চিন্তা যোগ হয়েছে। এর ওপর ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো স্বাস্থ্য খাতে মোহাম্মদ সাহেদসহ নানা কেলেঙ্কারির ঘটনা। সবকিছু মিলিয়ে অনেকটা চাপের মুখে থাকলেও বর্তমান সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা কমেনি দেশের সাধারণ মানুষের। শুধু তাই নয়, বর্তমান সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলার দিকে সফলভাবে এগুচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলোও আগাম বার্তা দিচ্ছে। দেশের বিশিষ্টজন এবং রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যেও এমন চিত্র ফুটে উঠেছে।
বৈশ্বিক মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দেশী-বিদেশী অপপ্রচার সত্ত্বেও মানুষের জীবনকে রক্ষা করা, জীবিকাকে সচল রাখা আর শক্তহাতে অনিয়ম-দুর্নীতি নির্মূল- এই তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে বর্তমান সরকারকে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের পর করোনা মহামারী ও ভয়াল বন্যায় দেশের লাখ লাখ মানুষ নিদারুণ কষ্টে থাকলেও তাঁদের বেশিরভাগই এখনও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি দৃঢ় আস্থাশীল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বিশ্বাস করেন, শেখ হাসিনা সুস্থ থাকলে কোন সঙ্কটই বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। একাত্তরের মতোই সকল সঙ্কট কাটিয়ে বাংলাদেশ আবারও বিজয়ী হবে। দেশ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে এবং এগিয়ে যাবে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সফলতার মহাসোপানে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, করোনার মহাসঙ্কটে গোটা দেশ, পুরো পৃথিবী। এর ওপর এসেছে দীর্ঘস্থায়ী ভয়াবহ বন্যা। এছাড়া করোনাকালেও স্বাস্থ্য খাতসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্নীতির তথ্য গণমাধ্যমে প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে কিছুটা সঙ্কটকাল ও হতাশার জায়গা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও একটি ভরসাস্থল হচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দেশের নেতৃত্বে রয়েছেন। আমরা যে পেশা বা অন্য যারাই নানা ক্ষেত্রে কথা বলছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সবার কথায় উঠে আসছে মানুষকে রক্ষায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্লান্তিহীন পরিশ্রমের কথা। সবারই বিশ্বাস, অতীতের মতো এই সঙ্কটকালকেও সফলভাবে মোকাবেলা করে দেশকে তিনি সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দীর্ঘায়িত হওয়ায় সরকারের ওপর চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। এই ভাইরাস কতদিন থাকবে এবং পরিস্থিতি কোথায় নিয়ে যাবে, তা কেউই সঠিকভাবে বলতে পারছে না। যদিও করোনার কারণে সৃষ্ট সঙ্কটে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সরকার নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। তবে এই কর্মসূচী কতদিন টেনে নিয়ে যাওয়া যাবে, তা নিয়ে চিন্তিত অনেকেই। করোনা মহামারীর পাশাপাশি দেশ এবার দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কবলে পড়েছে।
এর সঙ্গে বাড়তি দুশ্চিন্তা যোগ হয়েছে বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মহীনতা ও বন্যার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা। কর্মহীনদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হলে তা মোকাবেলায় সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করা, খাদ্য সঙ্কট থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা এবং বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে পুনর্বাসন করাই সামনের দিনগুলোতে সরকারের জন্য বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ। প্রাকৃতিক কিংবা মনুষ্যসৃষ্ট যেকোন দুর্যোগ সফলভাবে মোকাবেলা করা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার কাছে নতুন কিছু নয়। ভয়াল করোনা, বন্যার মধ্যে দলের ভেতরে অনুপ্রবেশকারী কিছু মতলববাজ, ধান্ধাবাজের অনৈতিক কর্মকা- সব মিলিয়ে আমরা কিছুটা সঙ্কটকাল অতিক্রম করছি। কিন্তু আমরাসহ দেশবাসী সত্যিই ভাগ্যবান- বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মতো একজন সৎ, বিচক্ষণ, দক্ষ, সাহসী নেতা দেশের নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি সব সঙ্কট কাটিয়ে অন্ধকার থেকে আলোর বর্তিকা হয়ে দেশকে আবারও উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়ক দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, এটা পুরো জাতি বিশ্বাস করেন। দেশের প্রায় সকল মানুষই বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর সম্পূর্ণ আস্থাশীল। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস, শেখ হাসিনার হাতে থাকলে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, সবকিছুতেই বড় ধাক্কা দিয়েছে করোনাভাইরাস। দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতি স্বাভাবিক করতে সরকার যখন নানামুখী প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তখনই হানা দিয়েছে বন্যা; যা করোনার পাশাপাশি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে যোগ হয়েছে। এতে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কর্মসংস্থান হারিয়ে বন্যাকবলিত এলাকার অনেক মানুষের আয়-রোজগার প্রায় বন্ধ। পাশাপাশি কর্মসংস্থানও হ্রাস পেয়েছে। এর প্রভাবে উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর করোনায় মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে সামনে আরও কঠিন সময় আসছে বলেই তাঁদের আশঙ্কা। করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের লড়াইটা অন্য দেশগুলো থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে বিশাল জনগোষ্ঠীকে সীমিত সম্পদ নিয়ে লড়তে হচ্ছে। সারা পৃথিবীর রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন দ্বিধাদ্বন্দ্বে জীবন বাঁচানো বড় নাকি অর্থনীতি রক্ষা করা বড়- এই কঠিন প্রশ্নে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই জীবন ও জীবিকা দুটোর ওপরই গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি একদিকে যেমন করোনা আক্রান্ত মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে আবার বিশাল জনগোষ্ঠী যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের খাদ্যের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি অর্থনীতির চাকাও গতিশীল রেখেছেন। গণভবন থেকে নিয়মিত সকাল থেকে রাত অবধি দাফতরিক কাজের পাশাপাশি করোনা ও বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত, দুর্গত মানুষকে রক্ষা, তাদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি সরাসরি মনিটরিং করছেন।
এ প্রসঙ্গে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মানুষকে ভালবাসার জাতির পিতার দর্শনকে বুকে ধারণ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা করোনা, বন্যাসহ সব দুর্যোগ মোকাবেলা করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কিংবা বিরোধী দলের নেতা যখনই যেখানে শেখ হাসিনা ছিলেন- তাঁর প্রতিটি কাজেই ছিল দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা। এ কারণেই একাত্তর সালে সাড়ে সাত কোটি মানুষের একমাত্র ঠিকানা যেমন ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এখন ২০২০ সালে এসে দেশের ১৬ কোটি মানুষের একমাত্র ঠিকানা হচ্ছে শেখ হাসিনা। বর্তমান বাস্তবতায় আমার দৃষ্টিতেও রাষ্ট্র ও দেশের মানুষের প্রয়োজনে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব অবিকল্প। তবে সবাইকে সতর্ক ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কেননা, সব সময় সমাজে মীরজাফর-মুশতাকরা থাকে, যারা খুব কাছে গিয়ে বিশ্বাসঘাতকার সুযোগ পায়। এখনও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য খুব কাছাকাছি থেকে কিছু মীরজাফর ষড়যন্ত্র করছে। এদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক এবং সম্মিলিতভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ফোর্বস ম্যাগাজিন ২৪ এপ্রিল করোনা মোকাবেলায় বিশ্বের দুশ’টি দেশের মধ্যে ৭টি দেশের পদক্ষেপের প্রশংসা করে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে তার মধ্যে একটি দেশ বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলা হয়, বাংলাদেশে ১৬১ (১৬ কোটি) মিলিয়ন মানুষের বাস। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতার সঙ্গে সঙ্কট মোকাবেলা তাঁর জন্য নতুন কিছু নয়। করোনা মোকাবেলায়ও তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাঁর প্রশংসা করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামও।
করোনা মহামারীর এই সঙ্কটে জনগণের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন, যতদিন এই সঙ্কট থাকবে ততদিন আমি ও আমার সরকার আপনাদের (জনগণ) পাশে থাকব। আমরা হার মানব না। মৃত্যু যে কোন সময় যে কোন কারণে হতে পারে। তার জন্য ভীত হয়ে হার মানতে হবে? আমরা হার মানব না, করোনা সঙ্কট কাটিয়ে দেশকে আবারও উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ব। আমরাই গড়তে পারব, সেই বিশ্বাস আমার আছে।
করোনা পরবর্তী সরকারের নানা পদক্ষেপের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশ শুরু থেকেই দুটো চ্যালেঞ্জ নিয়ে লড়ছে। মানুষের জীবনকে রক্ষা করা ও জীবিকাকে সচল রাখা। একটি মাত্র করোনা পরীক্ষার ল্যাব থেকে ৬৮টি ল্যাবে উন্নীতকরণ, সকল হাসপাতালে কোভিড রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, জরুরী ভিত্তিতে দুই হাজার ডাক্তার ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ করেছে। আরও দুই হাজার ডাক্তার, পাঁচ হাজার নার্স ও পাঁচ হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়। ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে বিশেষ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজেটে ৪২ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আরও ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এছাড়া মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি জীবিকা নিশ্চিতকরণের জন্য নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তের প্রায় ৫ কোটি লোককে রেশনের আওতায় এনে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১ কোটির বেশি পরিবারকে (৬ কোটি লোক) ত্রাণ দেয়া হয়েছে। ৫০ লাখ পরিবারকে এককালীন ২৫০০ টাকা মোবাইলের মাধ্যমে নগদ পাঠানো হয়েছে। গার্মেন্টস শিল্প থেকে শুরু করে সব মানুষের জীবন-জীবিকাকে স্বাভাবিক রাখতে প্রধানমন্ত্রী দফায় দফায় প্রায় এক লাখ কোটি টাকার ওপর বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। নন-এমপিওভুক্ত ৮১ হাজার শিক্ষক, ২৫ হাজার কর্মচারী, মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারী, ৪৬ হাজার গ্রামপুলিশের মাঝে নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে। একটি মানুষকেও যাতে না খেয়ে থাকতে না হয়, সে জন্য সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাজেটে সর্বাধিক ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, করোনা মহামারী ও ভয়াল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত-অসহায় মানুষকে রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দল আওয়ামী লীগের কোটি নেতাকর্মী-সমর্থককেও সফলভাবে কাজে লাগাতে পেরেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বের কোথাও তার নজির নেই। সঙ্কটে ও দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য, রাজনীতি- তা দলটির নেতাকর্মীরা আবারও প্রমাণ করেছেন। করোনা মোকাবেলায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা পেয়েই জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশের প্রতিটি এলাকার আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা যার যার অবস্থান থেকে অসহায়, অভুক্ত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের দফতর সেল থেকে জানা গেছে, দলীয়ভাবে সারাদেশে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৫ লাখ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা, সাড়ে ১০ কোটি নগদ অর্থ ছাড়াও চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ করেছে। শুধু ত্রাণ সহায়তাই নয়, লকডাউনের কারণে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় যখন কৃষকের ধান কাটতে শ্রমিকের অভাব দেখা দেয় তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগসহ দলের অন্য সহযোগী নেতাকর্মীদের কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিতে নির্দেশ দেন। দলীয় প্রধানের নির্দেশ পেয়ে ছাত্রলীগের পাশাপাশি যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এমনকি আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরাও ধান কাটার কাজে অংশ নেয়। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ টেলিমেডিসিন, ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, বিনামূল্যে সবজি বিতরণ ও লাশ দাফনের মতো কার্যক্রম এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। যারা দেশের সব শ্রেণীর মানুষকে প্রভাবিত করেছে।
করোনা ও বন্যার কবল থেকে দেশের মানুষকে রক্ষায় যখন সরকারী দলকে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে, ঠিক তখন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মোহাম্মদ সাহেদসহ বেশকিছু বিতর্কিত ব্যক্তির ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট বিক্রিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনায় সরকারকে অনেকটাই বেকায়দায় পড়তে হয়। বিদেশেও দেশের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও সঙ্কটে ফেলে দেয়। সরকারের হাইকমান্ডের কড়া নির্দেশে প্রশাসন শক্তহাতে অন্যায়-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, একের পর এক অভিযান চালিয়ে স্বাস্থ্য খাতসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বিতর্কিতদের খুঁজে খুঁজে বের করে গ্রেফতারের ঘটনায় প্রশংসাও কুড়িয়েছে নানা মহলে।
বৈশ্বিক মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্যসৃষ্ট সঙ্কট, দেশী-বিদেশী অপপ্রচার সত্ত্বেও সরকার সঠিক পথেই দেশ চালানা করছে। গত ৩ মে বিশ্বখ্যাত অর্থনীতি বিষয়ক সাময়িকী দি ইকোনমিস্ট এক প্রতিবেদনে বলেছে, ৬৬টি উদীয়মান অর্থনীতির তালিকায় বাংলাদেশ থাকবে নবম স্থানে। করোনার সঙ্কটের মধ্যে অর্থনীতির পালে হাওয়া লেগেছে। সারা পৃথিবীর অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশগুলোরও বর্তমান অর্থনীতি ভয়াবহ ধসে বিপর্যস্ত। ঠিক সেই সময় বাংলাদেশ আগের সব অর্জনকে হার মানিয়েছে বৈদেশিক রিজার্ভ ও রেমিটেন্সে। বাংলাদেশের ইতিহাসে গত জুন মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এক মাসে যা আগে কখনও আসেনি।
বিশ্লেষকদের মতে, সঙ্কটে হয় নেতৃত্বের পরীক্ষা। ’৯৮ সালে বাংলা দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যায় আওয়ামী লীগ সরকার একবার নেতৃত্বে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে। এর পর মানবসৃষ্ট অনেক সঙ্কট মোকাবেলায় যোগ্যতার সঙ্গেই টিকেছিল এই দল। এবারও কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে যোগ্যতার প্রমাণ দেবে বলে বিশ্বাস করেন দেশের সাধারণ মানুষ।
/আরএম