কৃষিশিল্প-বানিজ্য
শুকনো মৌসুমে সরিষা চাষ কৃষকের জন্য লাভজনক
আতিকুর রহমান, বাকৃবি প্রতিবেদক: বাংলাদেশে সাধাণরত ধান চাষের তিনটি মৌসুমের মধ্যে বোরো ধান চাষ হয় শীতকালে। শুকনো মৌসুমে তাই এ ধান চাষে সেচের মাধ্যমে অধিক ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহৃত হয়। এতে একদিকে যেমন ভূগর্ভস্থ খাবার পানি দিন দিন কমছে অন্যদিকে ধানের অধিক উৎপাদনে বাজারেও সঠিক দাম পাচ্ছে না কৃষকরা। শুকনো মৌসুমে তাই বিকল্প হিসেবে তেল জাতিয় শষ্য বিশেষ করে সরিষা একটি লাভজনক ফসল। বোরো মৌসুমে বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) উদ্ভাবিত বিনা সরিষা ৪, ৯ এবং ১০ চাষ করলে একরে ২০-২১ মন সরিষা উৎপাদন সম্ভব যা বোরো ধানের চেয়ে অধিক লাভজনক।
‘বিনা উদ্ভাবিত সরিষার স¤প্রসারণযোগ্য জাতসমুহের পরিচিতি, চাষাবাদ পদ্ধতি এবং নতুন শষ্য বিন্যাস অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিনার মহাপরিচালক ড. বীরেশ কুমার গোস্বামী।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে বিনার প্রশিক্ষণ হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ জেলার প্রায় একশত কৃষকের মাঝে বিনা উদ্ভাবিত উন্নত সরিষার বীজ বিতরণ করা হয় এবং উদ্ভাবিত সরিষার চাষ পদ্ধতি ,রোগ ও রোগ নিরাময়ে করণীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। ‘পুষ্টি নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ডাল, তেলবীজ ও দানাজাতীয় ফসলের উচ্চ ফলনশীল এবং প্রতিকুলতা সহনশীল জাত উদ্ভাবন’ কর্মসূচির আওতায় বিনা এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে।
ড. বীরেশ কুমার গোস্বামী আরও বলেন, দেশে প্রয়োজনের মাত্র ২০ ভাগ তেল উৎপাদিত হয়। বাকি ৮০ ভাগ আমদানি করতে হয় বাহিরের বিভিন্ন দেশ থেকে যার বেশিরভাগ আবার ভেজালে পরিপূর্ণ। তাই দেশে ভেজালমুক্ত তেলের চাহিদা মেটাতে বিনা উদ্ভাবিত সরিষা চাষে কৃষক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিনার গবেষণা বিভাগের পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. বীরেশ কুমার গোস্বামী। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বিনার প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস বিভাগের পরিচালক ড. মো. আজগার আলী সরকার, প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আসাদউল্লাহ, বিনার সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুল মালেক উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠানে বিনা সরিষার জাত সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মো. আব্দুল মালেক এবং সরিষার রোগ সম্পর্কে ধারণা দেন বিনার উদ্ভিদ রোগতত্ত¡ বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ইব্রাহীম খলিল।