দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
শাশুড়িকে কবরেও শান্তি দিলো না পুত্রবধূ!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সারাক্ষণ পুত্রবধূর অকথ্য ভাষায় গালাগালাজ আর অত্যাচারে শেষ পর্যন্ত কবর থেকে শাশুড়ির মরদেহ তুলে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে একটি পরিবার। নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের হাইলোড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরের দিকে অভিযুক্ত পুত্রবধূর বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে স্থানীয়রা।
এর আগে বাড়িতে পুত্রবধূর তুলকালামে উপায়ন্তর না পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় মরদেহটি কবর থেকে তুলতে বাধ্য হন পরিবারের সদস্যরা। পরে প্রায় আধা কিলোমিটার দূর থেকে মরদেহটি এনে বাড়ির উঠানে নতুন করে দাফন করা হয়।
অভিযুক্ত পুত্রবধূ হলেন- হাইলোড়া গ্রামের মঞ্জুরুল হকের স্ত্রী সাবেক গার্মেন্টস কর্মী রীনা আক্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূ রীনার স্বামীরা পাঁচ ভাই। যৌথ পরিবার হিসেবে বসবাস করছেন তারা। বিগত পাঁচ মাস আগে রিনার শাশুড়ি বৃদ্ধা মর্তুজা বেগম হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। ওই সময় পরিবারের সিদ্ধান্ত মতে জালাল উদ্দিনের স্ত্রী মর্তুজাকে পুত্রবধূ রিনার কেনা জায়গায় কবর দেয়া হয়। কিন্তু কবর দেয়ার কিছুদিন পর থেকেই মরদেহ তুলে অন্যত্র কবর দেয়ার জন্য শুরু হয় রিনার অত্যাচার। নিজের স্বামীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে কবর থেকে মরদেহ সরানোর জন্য।
বৃদ্ধ জালাল উদ্দিন বলেন, জীবনের শেষ লগ্নে এমন দৃশ্য দেখার আগে কেন আমার মৃত্যু হল না। সব আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিলাম।
এদিকে পরিবারে মারামারি-কাটাকাটি এড়িয়ে শান্তি বজায় রাখতে শেষ পর্যন্ত মর্তুজার পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে মরদেহটি তুলে বাড়ির ভিতরে এনে উঠানের মধ্যে কবর দেন। সকালে বিষয়টি জানাজানির পর স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা সঙ্গবদ্ধ হয়ে রিনার বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর করে। কিন্তু এর আগেই পরিস্থিতি বুঝে আত্মগোপন করে রিনা।
সরকারি কোনো প্রক্রিয়া না মেনে কবর থেকে মরদেহ উঠানো ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজ। এর কঠোর বিচারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হাইলোড়া গ্রামে স্থায়ী কোনো গোরস্থান নেই জানিয়ে তারা বলেন, এলাকাবাসীর মৃত্যুর পর দাফন করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট একটি গোরস্থানের বন্দোবস্ত করার জোর দাবি জানান গ্রামের বাসিন্দারা।
কাইলাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জানান, কবর থেকে মরদেহ উঠানোর বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল শনিবার শালিস বসবে। সকলের সিদ্ধান্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম খান জানান, এমন কোনো ঘটনার সংবাদ তাদের জানা নেই।