বিনোদন
শাকিবের এসকে ফিল্মসের নামে মামলা করবে জাজ!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ‘বিদেশী কোম্পানির কাছ থেকে টাকা এনে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্নধার আব্দুল আজিজের সঙ্গে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে লগ্নি করেছি। এতো সহজেতো হার মানতে পারি না। স্বাধীন দেশে সবারই ব্যবসা করার অধিকার আছে। তাই বলে আইন অমান্য করেতো আর সেটা সম্ভব নয়। আপনারা সবাই জানেন দেশী চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিতে জাজের অবদান কতোটুকু।
জাজের টাকায় দেশের ৩১২টি প্রেক্ষাগৃহে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি সবরাহ করেছি। এরমধ্যে ১২০টি প্রেক্ষাগৃহে ফুল সেটাপ এবং বাকি ১৯২টি প্রেক্ষাগৃহে সাউন্ড সিস্টেম সবরাহ করেছি। এতে কোম্পানির কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। চুক্তি অনুসারে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে আরও কয়েক বছর জাজের এই সব মেশিন ব্যবহার করতে হবে। আর যদি কেউ এই চুক্তিকে লঙ্ঘন করতে চান তাহলে পরিস্কার বলে দিতে চাই তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’
বুধবার (৭ আগস্ট) এমনটাই বলেছেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলিমুল্লাহ খোকন।
খোকন আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক কোনো ছত্রছায়ায় যদি কেউ জোর করে আমাদের এসব প্রেক্ষাগৃহে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চান তাহলে এর পরিনাম হবে ভয়াবহ।’
খোকন এমন হুশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করেছেন শাকিব খানের প্রযোজনা সংস্থা এস কে ফিল্মসকে উদ্দেশ্য করে। কারণ চলচ্চিত্রের স্বার্থে সম্প্রতি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন শাকিব। এরই ধারাবাহিকতায় নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিতই নতুন নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এছাড়া নিজের এবং অন্য প্রযোজকদের সিনেমা দর্শকদের ভালো ভাবে দেখা সুযোগ করে দিতে প্রেক্ষাগৃহগুলোকে আধুনিকায়ন করার অঙ্গিকার করেছেন শাকিব। যে কথা সেই কাজ! নায়কের কথা মতো ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রেক্ষাগৃহ আধুনিকায়নের কাজ। এরইমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে শাকিব খান সবরাহ করেছেন যুগ উপযোগী প্রজেকশন মেশিন। আর তাতেই ফেটে পড়ছেন জাজের এই নির্বাহী কর্মকর্তা।
খোকনের ফেটে পড়ারও অনেগুকলো কারণ রয়েছে। কারো নাম উল্লেখ্য না করে খোকন বলেন, ‘কিছু অসাধু প্রেক্ষাগৃহের মালিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান (শাকিবের এস কে ফিল্মস) তাদের সে সব প্রেক্ষাগৃহে মেশিন সবরাহ করেছে। কিন্তু জানতে পেরেছি সেসব প্রেক্ষাগৃহে পুরো সেটাফ ওই প্রতিষ্ঠান সবরাহ করতে পারেননি। শুধু প্রজেকশন মেশিন দিলেই আধুনিকায়ন করা সম্ভব নয়। এর সঙ্গে আরও অনেক জিনিসই যুক্ত করতে হয়। যেগুলো আমরা ১২০টি প্রেক্ষাগ্রহে সবরাহ করেছি। জানতে পেরেছি এস কে ফিল্মস থেকে আমাদের চুক্তি করা কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে শুধু মাত্র প্রজেকশন মেশিন সবরাহ করেছে। কিন্তু সাউন্ড সিস্টেম তারা দিতে পারেননি। এ অবস্থায় ওই সব প্রেক্ষাগৃহে আমাদের সাউন্ড সিস্টেমই ব্যবহার করছেন শাকিবের ওই প্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছি খুব শীঘ্রই।’
খোকন আরও বলেন, ‘দু:খের সঙ্গে বলতে হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানে (শাকিবের এস কে ফিল্মস) আমার এখানে চাকরি করা দুইজন ব্যক্তি জয়েন করেছে। যারা আমার প্রতিষ্ঠানের সফটয়ার চুরি করে পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে আমি মামলাও করতে গিয়েছিলাম রাজধানীর হাতিরঝিল থানায়। তবে দায়িত্বরত অফিসার মামলাটি গ্রহণ করেননি। তারা আমাকে আস্বস্থ করেছেন বিষয়টি মিটমাট করে দেবেন। এর পেছনে শাকিবেরও হাত রয়েছে বলে আমি মনে করছি।’
আসছে ঈদে আমাদের চুক্তিবদ্ধ করা কোনো প্রেক্ষাগৃহে যদি কোনো কোম্পানি তাদের মেশিন ব্যবহার করেন। বা আমাদের মেশিন খুলে রেখে তাদের মেশিন লাগান তাহলে এর পরিনাম অবশ্যই ভয়াবহ হবে। ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমি আদালনের দারস্থ হবো। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক কারণে যদি আমি ন্যায় বিচার না পাই তাহলে সংবাদ সম্মেলন করে জাজের সকল কর্মকান্ড বন্ধ করে দেবো। এরপর কানাডা গিয়ে এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে করবো। কারণ কানাডাতে আমার একটি অবস্থান রয়েছে। প্রয়োজনে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতেও পিচ পা হবো না।’
এদিকে সম্প্রতি প্রদর্শক সমিতির নেতারা একটি মিটিং করেছেন। সে মিটিংয়ে শাকিবের এই উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে শাকিবের প্রতিষ্ঠান থেকে যদি তাদের প্রেক্ষাগ্রহগুলোতে যুগ উপযোগী প্রজেকশন মেশিন সবরাহ করা হয় তাহলে তারা আগের অন্য সব কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করবেন।
এ নিয়েও জাজের রয়েছে কঠোর হুশিয়ারি। বিষয়টি নিয়ে খোকন বলেন, ‘প্রদর্শক সমিতির যেসব নেতারা শাকিবের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাজের মেশিন ব্যবহার করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন তাদের কাছে জাজের অনেক পাওয়া রয়েছে। জাজের সে পাওনা না মেটানোর জন্যই এই নীল নকশা তৈরী করেছেন তারা। তবে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই কোনো ভাবেই আপনারা পার পাবেন না। চুক্তির বাইরে গেলেই সবাইকে কঠোক ভাবে প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে জাজ।’