দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

লবণের মাঠ থেকে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর

মাতারবাড়ি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার বঙ্গোপসাগর উপকূলে ছিল লবণের মাঠ। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আমদানি করা কয়লা খালাসের জন্য সেই মাঠ খনন করে বানানো হচ্ছে জাহাজ চলাচলের কৃত্রিম নৌপথ। সাগর থেকে এ নৌপথে ঢোকার মুখে হাতের ডানে নির্মিত হবে টার্মিনাল। আর একই নৌপথ ব্যবহারের সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে এ লবণের মাঠেই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর।

জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে নির্মিত এ সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম চার বছরের মধ্যে চালুর আশা করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে বন্দর এবং এ সংলগ্ন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রকল্পটির পরিচালক ও চট্টগ্রাম বন্দরের পর্ষদ সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, করোনার কারণে মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। সবকিছু কাটিয়ে এরইমধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তারা ডিজাইন করবে। ডিজাইন শেষে প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা মনিটর করবে। এক্ষেত্রে ডিজাইনগত কোনো সমস্যা পেলে তা সমাধান করবে। সব মিলিয়ে ২০২৪ সালের শেষ কিংবা ২০২৫ সালের শুরুর দিকে এটি চালুর আশা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, জাপানের কাশিমা বন্দরের আদলে এ বন্দরটি তৈরি করা হচ্ছে। ধানক্ষেতকে কাজে লাগিয়ে ১৯৬২ সালে কাশিমা বন্দরের নির্মাণকাজ শুরু হয়। বন্দর নির্মাণের পর সেটি ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। মাতারবাড়ি বন্দর ঘিরেও তেমনটা আশা করা যাচ্ছে।

এ সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনায় প্রথম ধাপে রয়েছে দুইটি টার্মিনাল। এরমধ্যে সাধারণ পণ্যবাহী ও কনটেইনার টার্মিনালে অনায়াসে ভিড়তে পারবে ১৫ মিটার গভীরতার জাহাজ, যা দেশের অন্য কোনো বন্দর জেটিতে ভিড়তে পারে না। প্রতিটি জাহাজে আমদানি বা রফতানি করা যাবে প্রায় আট হাজার টিইইউ’স কনটেইনার পণ্য।

প্রথম পর্যায়ে টার্মিনালটি নির্মিত হবে ১৮ হেক্টর জমিতে। যার বার্থ থাকবে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ। ৮ হাজার টিইইউ জাহাজ ধারণে সক্ষম এ টার্মিনালের বার্ষিক ক্ষমতা হবে ৬ লক্ষ থেকে ১.১ মিলিয়ন টিইইউ।

পরবর্তীতে টার্মিনালটিকে ৭০ হেক্টর জমিতে প্রসারিত করা হবে। সেক্ষেত্রে এটির বার্থ থাকবে এক হাজার ৮৫০ মিটার। বার্ষিক ক্ষমতা হবে ২.৮ মিলিয়ন টন।

প্রথম ধাপে বন্দর ও পণ্য পরিবহনের জন্য সড়ক নির্মাণসহ খরচ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে বৈদেশিক ঋণ সহায়তা হিসেবে জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেবে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং বাকি দুই হাজার ২১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা দেবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close