দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
লক্ষ্মীপুরে চুরির অভিযোগে যুবককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক:লক্ষ্মীপুরের চুরির অপবাদ দিয়ে রহমত উল্লাহ নামে এক যুবককে প্রকাশ্যেই খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এরপর ১০ ফুট নাকে খত দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। সোমবার দুপুর থেকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এর আগে, রোববার দুপুরে সদর উপজেরার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নে কাজীর দিঘীরপাড় বাজারে রহমত উল্লাহকে চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করে বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভুক্তভোগী রহমত উল্লাহ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার চৌকিদার বাড়ির আহমদ উল্লাহর ছেলে বলে জানা গেছে। তবে এই ঘটনার পর নির্যাতিত যুবক বা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, রহমত উল্লাহকে পেছন দিক থেকে সাইনবোর্ডের একটি খুঁটিতে হাত-পা এক রশিতে বেঁধে রাখা হয়। এসময় বাজারের ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন লাঠি দিয়ে ওই যুবককে পিটাতে দেখা যায়। এসময় উত্তেজিত কয়েকজনের হাতে লাঠি দেখা যায়। একপর্যায়ে সুমন হোসেন নামে একজন এসে রহমত উল্যাহকে ১০ ফুট নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত যেতে বলে। খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত গেলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। নাকে খত দেওয়া অবস্থায় পেছন থেকে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায় কয়েকজন যুবককে।
কাজিরদিঘীর পাড় বাজারের ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘রোববার দুপুরে ওয়াদুদ হোসেন নামে বাজারের একজন মুদি দোকানদারের ক্যাশ (টাকার বাক্স) থেকে টাকা চুরির চেষ্টা করে রহমত। এসময় তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা তাকে বেদম মারধর করে। পরবর্তীতে আমি অভিযুক্তকে উদ্ধার করে ছেড়ে দিয়েছি।’
নিজাম উদ্দিন আরও বলেন, ‘নাকে খত দেওয়ার বিষয়টি ঠিক হয়নি। কিন্তু ঘটনাটি এমন পর্যায়ে ছিল, আমি নাকে খত দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নিষেধ করতে পারিনি। কারণ সেখানে বাজারের অন্য ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা ছিলেন।’
এর আগে, একইদিন সদর উপজেলার লাহারকান্দি সৈয়দপুর এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাবেক যুবলীগ নেতা রাশেদ আলম দুই নারীকে প্রকাশ্যেই পিটানো একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ অভিযুক্ত রাশেদ আলমকে সোমবার দুপুরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধ করলে আইনগতভাবে তার বিচার হবে। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ায় কোনোভাবেই কাম্য নয়। চুরি করলে মামলা হবে, তার বিচার হবে। কিন্তু জনসম্মুখে এভাবে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন, আবার নাকে খত দেওয়া কোনোভাবে মেনে নেওয়া হবে না। জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। পাশাপাশি ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ। আসলে কী কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
/একে