দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

র‌্যাব-পুলিশ সেজে প্রকাশ্যে ছিনতাই-খুন, লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন খুনিরা

ঢাকা অর্তনীতি ডেস্কঃ রাজধানীতে র‌্যাব-পুলিশ সেজে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা মাঝে কিছুটা কমে গেলেও হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। আর এ ধরনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তাদের বেশভূষায় আসল-নকল চেনাই দুষ্কর। কারণ গায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জ্যাকেট, কোমরে পিস্তল ও ওয়াকিটকি, আর হাতে হাতকড়া ঝুলানো থাকে। পরিচয়পত্র দেখেও বোঝার উপায় নেই আসল বা নকল।

জানা যায়, শুধু ছিনতাই বা ডাকাতি নয়, এই চক্রটি সব ছিনিয়ে নেয়ার পর হত্যা করতেও দ্বিধা করে না। সম্প্রতি এমন একটি দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী দলকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, র‌্যাব লেখা জ্যাকেট পড়া দুজন লোক একটি বাসে উঠল। এরপর জোর করে বাস থেকে একজনকে বের করে দিন-দুপুরে সবার সামনেই তাকে সাদা গাড়িতে তোলার চেষ্টা করছে। শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গী আরো দুই-একজনের সহায়তায় তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়।

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ভুয়া র‍্যাব পরিচয়ে ছিনতাইকারী দলের তথ্যদাতা বলেন, আমরা অনুসরণ করে পেছনে পেছনে গিয়ে পরে ফোনে বলে দিতাম অমুককে উঠাতে হবে। সে সময় র‍্যাব পরিচয়ে উঠিয়ে নেই।

রাজধানীসহ দেশে প্রতিনিয়ত এভাবেই র‌্যাব-পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, অপহরণ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে করা হয় ভয়াবহ নির্যাতন।

এসব ঘটনায় রাশেদ নামের এক ভুক্তভোগী প্রাণে ফিরলেও গত মাসে মিরপুরে একই ধরনের ঘটনায় জীবন দিতে হয়েছে সুলতান আহমেদ নামের একজনকে। ঘটনায় জড়িতরা নিজেরাই বর্ণনা করেছেন, কীভাবে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় সুলতানকে।

সুলতান অপহরণে যুক্ত আরো একজন বলেন, সুলতানকে গাড়িতে উঠিয়ে ঠান্ডা করতে চাইলেও কিছুতেই পারছিলাম না। পরে মনির বললো, গামছা পেঁচিয়ে ধরতে। এ চক্রের আরো একজন বলেন, ফরহাদ দেখে লোকটা মারা গেছে। আমি এর মধ্যে গাড়ি ব্রেক করতেই ওরা গাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

রাজধানীতে র‌্যাব ও পুলিশ পরিচয়ে চুরি-ছিনতাইয়ে এ ধরনের প্রায় ২০০টি টিম সক্রিয় রয়েছে বলে স্বীকার করেছে তারা। এরইমধ্যে সুলতান হত্যায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারে নেতৃত্বে দেয়া এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি টিম দুই ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করে।

গোয়েন্দা বিভাগ উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, তারা রাস্তায় প্রকাশ্যে মানুষ উঠিয়ে নিয়ে যায়। পুলিশ বা র‍্যাবের পরিচয়ে তারা এই কাজ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরাও পড়ছে।

তিনি আরো বলেন, বারবার গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী ও ডাকাতরা বের হয়ে যায়। আর এ কারণেই মর্মান্তিক এসব ঘটনা কমছে না।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close