দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
র্যাবের এর পৃথক অভিযানে ভুয়া চাকুরিদাতা প্রতিষ্ঠানের ২৩ প্রতারক গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীতে পৃথক অভিযানে শাহ আলী, পল্লবী, কাফরুল ও তেজগাঁও এলাকা থেকে ভুয়া চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের ২৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৫০ জন ভুক্তভোগীকে। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) র্যাব-৪ উপ-অধিনায়ক মেজর কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, কয়েকটি ভুয়া কোম্পানি চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন সংবাদে র্যাব-৪-এর বিশেষ দল বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) রাত পর্যন্ত রাজধানীর শাহ আলী, পল্লবী, কাফরুল ও তেজগাঁও থানা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ভুয়া চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং ২৩ জন প্রতারককে গ্রেফতার করে।
র্যাব জানায়, অভিযানে শাহ আলী থানার ‘লাইফ গার্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপ্লাই লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০টি জীবনবৃত্তান্তের ফরম, ১৫টি চাকরির আবেদন ফরমের বই, ৪টি রেজিস্টার, ৪টি সিলমোহর, ৭টি মোবাইল ফোন, ২০০টি ভিজিটিং কার্ড এবং নগদ ৫ হাজার টাকাসহ ৫ জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার প্রতারকরা হলো, তাসলিমা সুলতানা (৩০), সায়মা ইসলাম (২৪), মৌসুমী আক্তার (২৮),সাইফুল ইসলাম (৩০) ও রাকিব হোসেন (২০)।
রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকার অভিযানে ‘বিজবন্ড আইটি লিমিটেড’ থেকে ৫০টি টাকা প্রাপ্তির রসিদ, ৩০০টি ভর্তি ফরম, ৬৫টি অঙ্গীকারনামা, ৭০টি চাকরির নিয়োগ ফরম, ২০০টি কমিশন ভাউচার, ৭টি রেজিস্টার, ১টি প্যাড এবং ৪টি মানিরিসিটসহ ৩ জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলো, সুমনা খাতুন (১৯), সোহেল ফরাজি (২৯) ও শামীমা আক্তার (২৮)
র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর কাফরুল থানার শাহ আলী প্লাজায় ‘ডিজিট-৪ সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠান থেকে ১০টি প্রচারপত্র, ৫টি আইডি কার্ড, ১০টি মনোগ্রাম এবং ৪০টি ভর্তি ফরমসহ ৬ জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলো, মো. কামরুজ্জামান (৩৩), মশিউর রহমান (২৭), মো. সোহাগ (১৯), মো. রুবেল (২৮), মমতাজ নায়রী (৪৪) ও শাহীনূর আক্তার (২৭)।
এদিকে তেজগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘বিজবন্ড আইটি লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫টি টাকা প্রাপ্তির রসিদ, ১টি ভর্তি ফরমের বই, ৫টি চুক্তিপত্র, ১টি সিল, ৫০টি ভিজিটিং কার্ড, ৪৫টি আইডি কার্ড, ১৫টি জীবনবৃত্তান্ত এবং ১৫টি কমিশন ভাউচারসহ ৯ জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত প্রতারকরা হলো, আব্দুল হামিদ (৩৮), আব্দুল জব্বার (৩৬), গাজিউর রহমান (২২), আব্দুস সালাম (৩৬), মাহমুদা খাতুন (৩০), মাসুম কবির (২৯), ফরিদ ইমরান (২৬), এনামুল হক (২৭) ও মাহমুদা (৩০)।
র্যাব-৪ উপ-অধিনায়ক মেজর কামরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিরা তাদের অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া চক্রটি রাজধানীসহ দেশের ভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া করে বিভিন্ন নামে-বেনামে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান খুলতো। অল্প শিক্ষিত বেকার ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল তরুণ-তরুণীদের আকর্ষণীয় ও উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ আদায় ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারক চক্রটি বিপুল পরিমাণে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো।’
তিনি জানান, উক্ত গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ অসাধু নব্য প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।
/এন এইচ