প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে
রেড লাইন অতিক্রম করলে যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংস অনিবার্য: ইরান
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ইরানের শত্রুরা এখন পর্যন্ত এমন কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেনি যার পাল্টা জবাব তেহরান দেয়নি। ভবিষ্যতেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রেড লাইন অতিক্রমের চেষ্টা করলে তাদের ধ্বংস অনিবার্য। ইরানিদের জান, মাল ও সম্মান নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে চাইলে তাকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। সোমবার এমন মন্তব্য করেছেন ইরানের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রিভোলিউশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)-র প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি।
১৫ নভেম্বর ইরানি কর্তৃপক্ষ সরকারি রেশনে দেওয়া পেট্রোলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। লিটার প্রতি রেশনের পেট্রোলের দাম ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার রিয়াল করার কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য মাসিক বরাদ্দ হিসেবে তেলের পরিমাণ ৬০ লিটার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এর বাইরে বাড়তি পেট্রোলের প্রয়োজন পড়লে লিটার প্রতি দাম পড়বে ৩০ হাজার রিয়াল। সরকারের ওই ঘোষণার পরই দেশজুড়ে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে। তীব্র আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে শতাধিক প্রাণহানির পর সোমবার তেহরানে সরকারের সমর্থনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে দেওয়া ভাষণেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আইআরজিসি প্রধান।
তিনি বলেন, বিগত ৪০ বছর ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শত্রুরা ইরানের কাছে বহু পরাজয়ের শিকার হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের তেহরানবিরোধী কোনও পদক্ষেপই সফল হয়নি। সাম্প্রতিক বিক্ষোভ কেন্দ্রিক সহিংসতায় তারা সেসব পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু অতীতের মতো এবারও তারা ব্যর্থ হয়েছে।
আইআরজিসি প্রধান বলেন, সাম্প্রতিক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টার পর সারাদেশে দুষ্কৃতিকারীদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে যেসব পাল্টা বিক্ষোভ হয়েছে তা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে মারাত্মক চপেটাঘাত।
ইরান, সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননে শত্রুদের অশুভ পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেওয়ায় সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি-র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জেনারেল সালামি।
এদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশজুড়ে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইআরজিসি-র উপ-প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী ফাদাভি। তবে এ বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে অন্তত ১৪৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর মাত্রারিক্ত বল প্রয়োগের নিন্দা জানাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
অন্যদিকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলনে ‘ভাড়াটে বিক্ষোভকারীরা’ অংশ নিয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। দেশজুড়ে আটক হওয়া ‘ভাড়াটে বিক্ষোভকারীদের’ কঠোর শাস্তি দেওয়ারও অঙ্গীকার করেছে দেশটি। বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠিন সাজা দিতে বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইআরজিসি-র উপ-প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী ফাদাভি। সূত্র: আল জাজিরা।
#এমএস