জীবন-যাপনবিশ্বজুড়ে

যে গ্রামের ঘরে নেই দরজা ,ব্যাংকে নেই তালা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক : টিভি’র পর্দা বা পত্রিকা খুললেই সহজেই চোখে পড়ে চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা। আবার ছিনতাইকে  কেন্দ্র করে হত্যার ঘটনাও  প্রচার হতে দেখা যায় বেশ নিয়মিত। তাই নিজেকে বিপদ থেকে মুক্ত রাখতে ও অপ্রীতিকর ঘটনার হাত থেকে  রক্ষা করতে সব সময়ই আমাদের  থাকে একটু বাড়তি সাবধানতা ।

কিন্তু এই যুগে এসেও গ্রামের কোনো বাড়ির থাকে না দরজা ,ব্যাংকে লাগে না  তালা ,থাকে না  কোনো চোর ডাকাতেরও ভয়, এমন সংবাদ প্রচার হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় চলে আসে পৃথিবীর এক প্রান্তে নিরবে পড়ে  থাকার গ্রামের নাম। বলছি  ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের আহমেদনগর জেলার শনি-শিঙ্গাপুর গ্রামের কথা।

এ গ্রামে শুধু বাড়ি নয় এলাকার দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, সরকারি বিল্ডিং, ব্যাঙ্ক— কোথাও কোনো দরজা নেই। এখানটায় নির্ভয়ে জীবন কাটান মানুষেরা। এই গ্রামের কোনো বাড়িতেই দরজা লাগানো নেই। তবুও ঘরের ভেতরে রাখা টাকা-পয়সা, গয়না, দামি জিনিসপত্র চুরি যায় না।

২০১১ সালে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এ গ্রামে তাদের শাখা খোলে। এ ব্যাংক দরজা লাগিয়েছে যদিও, তবে দরজায় কোনো তালা লাগানো হয় না। এটাই ভারতের প্রথম এবং এখনও একমাত্র লকলেস ব্যাংক। তবে প্রতিদিন ব্যাংক বন্ধ হওয়ার আগে সমস্ত নগদ টাকা তারা পাশের গ্রামের শাখায় স্থানান্তরিত করে দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এখানকার মানুষের বিশ্বাস, শনি দেবতা তাদের রক্ষা করবেন। গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, আজ পর্যন্ত কোনো দিন চুরি হয়নি এই গ্রামে। পৌরাণিক বিশ্বাস থেকে  গ্রামবাসী মনে করে , কেউ যদি চুরি বা অপরাধ করার সাহস দেখায় তার জন্য তাকে পস্তাতে হবে। সারা জীবনের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারাবেন তিনি।

তবে, এই ঘটনা স্বচক্ষে দেখার জন্য  প্রচুর পর্যটক এ গ্রামে আসেন। পর্যটন শিল্পই প্রত্যন্ত এ গ্রামের অন্যতম উপার্জনের রাস্তা হয়ে উঠেছে। বিশ্বাসে আঘাত করে সেই পর্যটন শিল্পের কোনো ক্ষতি গ্রামবাসী করতে চান না। তাই এমনটা হতেই পারে যে, চুরি-ডাকাতি বা অন্যান্য অপরাধ তারা নিজেদের মধ্যেই চেপে যান। পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে শুধু –শুধু  নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করতে একদমই নারাজ তারা।

/ আর জে

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close