আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ লাখ পিপিই রপ্তানি করছে বেক্সিমকো
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: দেশের বেক্সিমকোর তৈরি করা ৬৫ লাখ পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা সুরক্ষা পোশাক রপ্তানি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। এমিরেটসের একটি উড়োজাহাজে চেপে সোমবার (২৫ মে) সেই পিপিই গাউনের প্রথম চালান দেশটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমারজেন্সি এজেন্সির (এফইএমএ) জন্য দেশটির পোশাকের ব্র্যান্ড হেইনস বাংলাদেশের বেক্সিমকোর কাছ থেকে ৬৫ লাখ পিপিই গাউন কিনছে। ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হ্যানস প্রায় ৪০টি দেশে ব্যবসা করে। তাদের কর্মীর সংখ্যা ৬৫ হাজার ৩০০।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ সোমবার পিপিইর প্রথম চালানটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান জামালউদ্দীন আহমেদ, বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ডিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ নাভিদ হোসেন, বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান প্রমুখ ।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো বাকি বিশ্বও করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই সংকটময় সময়ে বাংলাদেশ মাত্র দুই মাসের মধ্যে বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পিপিই রপ্তানি করছে, তাও ১০-২০ হাজার নয়, ৬৫ লাখ পিস। এটি অভাবনীয় অর্জন।’
যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথম পিপিই বড় চালান যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারের জন্য বড় পরিসরে বিশ্বমানের পিপিই উৎপাদনের পদক্ষেপ নেওয়ায় বাংলাদেশকে স্বাগত জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, সবকিছুই হয়েছে মাত্র দুই মাসে। বেক্সিমকো ও বাংলাদেশ দ্রুত সময়ে পিপিইর উৎপাদন শুরু করেছে। এ জন্য আজকে এই উড়োজাহাজটি অতিপ্রয়োজনীয় পিপিই নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমলাতান্ত্রিক ও ব্যবসায়িক উভয় দিক দিয়েই দুর্দান্ত গতিতে কাজ হয়েছে।
সৈয়দ নাভিদ হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মাত্র দুই মাসের মধ্যে আমরা আমাদের বিশ্বমানের উৎপাদন, প্রযুক্তিগত ও ডিজাইন দক্ষতা এবং সক্ষমতা দিয়ে পিপিই উৎপাদন শুরু করি।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পিপিই উৎপাদনের নতুন কেন্দ্রস্থলে পরিণত হওয়ার জুতসই জায়গা। এতে করে একদিকে বিশ্ববাসী নিরাপদে থাকবে অন্যদিকে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থনীতিও সচল থাকবে।’
বেক্সিমকো জানায়, আগামী তিন বছরের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পিপিই উৎপাদানকারী প্রতিষ্ঠান হতে চায় তারা। সে জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বেক্সিমকো পিপিই ডিভিশন। ৩৫০ একর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক থেকে মাত্র ১০ মিনিট দূরে স্থাপন করা হচ্ছে নতুন পিপিই ইন্ডাস্ট্র্রিয়াল পার্ক।
ইতিমধ্যে শিকাগোভিত্তিক জেস্ট ডিজাইনসের সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি করেছে বেক্সিমকো। যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটে স্থানীয় সরকার ও নগর কর্তৃপক্ষের সহায়তায় যৌথভাবে একটি পিপিই উৎপাদন কারখানা স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করছে উভয় প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে ডেট্রয়েট শহরে কভিড-১৯ পিপিই সরবরাহ করছে জেস্ট।