দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা: সতর্ক থাকতে বললেন তথ্যমন্ত্রী
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং একপেশে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় মন্ত্রী এ কথা জানান। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে একটি গোষ্ঠী দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। তারা আগেও এমন অপপ্রচার করেছে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এসময় এদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন হাছান মাহমুদ।
এদিকে রাজধানীতে আলাদা এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কখনোই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না। দুর্বৃত্তদের হামলা থেকে আত্মরক্ষার জন্য কখনো কখনো গুলি ছুড়তে হয়। তারপরও প্রতিটি ঘটনাই তদন্ত হয়।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারকে তলব করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বিসিএস (পররাষ্ট্রবিষয়ক) অ্যাসোসিয়েশনের (এওএফএ) এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দুঃখজনক। র্যাবের কারণে জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাষায় নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে তিন দেশের ১৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ তালিকায় বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাবে বিভিন্ন পদে কর্মরত ছয় কর্মকর্তার নামও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের জারি করা রিপোর্টে দাবি করা হয় গণতন্ত্রের প্রতি মার্কিন সরকারের সর্বাত্মক নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ দাবি নাকচ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় মাদক কারবারিরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। আত্মরক্ষার জন্য প্রশিক্ষিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাল্টা গুলি চালালে কখনো কখনো হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে প্রতিটি ঘটনাই ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে তদন্ত করা হয়।
এদিকে অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞায় হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এটি তাদের রাজনীতির অংশ। বিভিন্ন দেশ দখল করে হত্যা, লুট, নির্যাতনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই প্রতিনিয়ত যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তা নজিরবিহীন বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক।
অনেক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী মানবাধিকার ও গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।