প্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্যশেয়ার বাজার
যতই শক্তিশালী হোক, শেয়ারবাজারে কারসাজির দিন শেষঃ বিএসইসি চেয়ারম্যান
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যতই শক্তিশালী হোক, শেয়ারবাজারে কারসাজি করে আর পার পাওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ার দিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, শেয়ারবাজার থেকে টাকা নিয়ে পালানোর দিন শেষ। এক্ষেত্রে যারা আগে, বিভিন্নভাবে অনিয়মে যুক্ত ছিলেন, তাদের চিহ্নিত করে, ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শনিবার পুঁজিবাজার বিষয়ক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে বিএসইসি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের ব্যবসা সহজ করার জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার বিএসইসির পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে, সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে। পুঁজিবাজার থেকে অনিয়ম এবং বিভিন্ন কারসাজি দূর করতে ডিএসইর তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগে সংস্কার জরুরি। ডিএসইর ওয়েবসাইট নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল তার জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে। শিগগিরই তারা আমাদের কাছে এই রিপোর্ট জমা দেবেন। রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিতে বলবো।
শেয়ারবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করতে বিএসইসি বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এককভাবে ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই এমন কোম্পানির ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। অনেক বোর্ড ভেঙেও দেয়া হতে পারে। পাশাপাশি স্বতন্ত্র পরিচালকদের কার্যক্রম কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া সম্প্রতি ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলো কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাজারকে আরো বড় করতে হবে, যাতে তিন থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দৈনিক লেনদেন হয়।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারে শতভাগ সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারলে, মানুষ এখানে বিনিয়োগের ঝুঁকি নেবে না। পুঁজির নিরাপত্তা দিতে না পারলে, তারা কষ্টার্জিত অর্থ শেয়ারবাজারে নিয়ে আসবে, প্রশ্ন রাখেন তিনি। এ কারণে সবার আগে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।
মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়ার পর কিছু কোম্পানি ঠিকমতো কাজ করছে না উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান হঠাৎ কোম্পানি করে বন্ধ করে চলে যাচ্ছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মানুষকে ঠকানোর চেষ্টা করেছেন, সেসব কোম্পানিতে সম্ভবত আমাদের বোর্ডও ভেঙে দিতে হতে পারে। সেখানে আমরা স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করব। আইনের মধ্যে থেকেই এগুলো করা হবে। না হলে শেয়ার বাইব্যাক (পুনঃক্রয়) করে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- বিএমবিএর প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান। সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট শরীফ আনোয়ার হোসেন এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ড এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান ইমাম।
এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন- শেয়াবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ, ডিএসই পরিচালক রাকিবুর রহমান, মিনহাজ মান্নান ইমন, রশীদ আহমেদ লালীসহ অনেকে।
/এন এইচ