তথ্যপ্রযুক্তি
মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার, বাড়ছে দাম্পত্য কলহ ও ইনজুরি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: মোবাইল ফোনের জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়েছে দৈনন্দিন জীবনের সর্বক্ষেত্রেরই এটির গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। অনেকাংশে ফোনের এ প্রয়োজনীয়তা আসক্তিতে রূপ নেয়।
কিছুদিন আগেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের এক গবেষণায় উঠে এসেছে স্মার্টফোনের আসক্তি মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে; এমনকি মানসিকভাবে অসুস্থ করে ফেলছে ব্যবহারকারীকে।
ভেবে দেখুন, কোনোদিনই কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের ব্যক্তি বই পড়তে পড়তে রাস্তায় হাঁটবেন না। কিন্তু মোবাইলের স্ক্রিনে আর্টিকেল বা সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট পড়তে পড়তে দিব্যি আমরা হেঁটে যাই। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী আমাদের প্রায় সবারই খারাপ এ অভ্যাসটি রয়েছে।
শুধু অভ্যাস নয়, মোবাইল ফোন আমাদের রোগের ধরনও পাল্টে দিয়েছে। অত্যধিক পরিমাণে ফোন ব্যবহারের ফলে বাড়ছে ঘাড়, চোখ, কান ও মাথাব্যথা। ২০ বছর আগেও ঘাড়, চোখ, কান ও মাথাব্যথার মতো সমস্যাগুলো এত প্রকট ছিল না। ব্যথা বাড়ানোর পাশাপাশি মোবাইল ফোন দুর্ঘটনার হারও বাড়িয়ে দিয়েছে।
১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৭ সালের তথ্য পর্যালোচনা করে ‘হেড অ্যান্ড নেক ইনজুরিস অ্যাসোসিয়েটেড উইথ সেল ফোন ইউজ’ নামে একটি গবেষণাপত্র লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক।
সেখানে দেখা গেছে, গাড়ি চালানোর সময় ও হাঁটার সময় ফোনে মেসেজ করার ফলে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন ১৩ থেকে ২৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা। দুর্ঘটনায় মুখে ও মাথায় আঘাত পেয়ে কেটে যাওয়ার হার বেশি।
স্মার্টফোনের প্রতি এ ধরনের আসক্তিমূলক আচরণ অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে বলে গবেষণায় বলা হয়েছে, যেমন স্ট্রেস বা শারীরিক ও মানসিক চাপ, হতাশা, খিটখিটে মেজাজ, ঘুমের অভাব এবং স্কুলের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়া। মোবাইল ফোনের কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হারও বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেফটি কাউন্সিল জানিয়েছে, ২০১৮ সালে মোবাইল ব্যবহারের কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৮৪১ জন।
এ ছাড়াও মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারে ইনজুরি যেমন বেড়েছে তেমনি বাড়ছে দাম্পত্য কলহ। ফোনের আসক্তির কারণে দাম্পত্য কলহ বেড়েছে বলে দাবি করছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট-বেজড মার্কেট রিসার্চ ও ডাটা অ্যানালাইসিস ফার্ম ‘ইউগভ’।
দাম্পত্য কলহের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে, এক-তৃতীয়াংশই সঙ্গীর অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে নিজেকে অবহেলিত ভাবছে ও সন্দেহবাতিকগ্রস্ত হচ্ছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য একান্ত সময় কাটানো প্রয়োজন। মোবাইলের কারণে তা হচ্ছে না। মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারে হুমকির মুখে পড়েছে দাম্পত্য সম্পর্ক।
/এনএ