বিশেষ প্রতিবেদন
মেহেরপুরে ১৫০ বছরের ঐতিহ্য সাবিত্রী মিষ্টি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: মেহেরপুরের সাবিত্রী মিষ্টি এমন একটি নাম। একটি মিষ্টি একটি জেলার পরিচিতি তুলে ধরতে পারে।
যে কোন উৎসব এলেই মেহেরপুরের মিষ্টি প্রিয় মানুষ ভোজনের পরই এই মিষ্টির স্বাদ বেশ ঘটা করেই পূরণ করে। ১৫০ বছরের পুরানো এই মিষ্টির কদর ও চাহিদা দেশ এবং আন্তজার্তিক পর্যায়ে।
মেহেরপুরে জমিদার আমল থেকেই এই মিষ্টির প্রচলন। শহরের বাসুদেব কুমারের সৃষ্টি এই মিষ্টি তখন থেকেই ব্যাবসায়িকভাবে তৈরী ও বিক্রি শুরু হয়। দ্রুতই জমিদারদের কাছে সুস্বাদু হয়ে ওঠে এই মিষ্টি। পরে, ব্রিটিশ আমলে ইংরেজদের কাছে এই মিষ্টি প্রিয়তা লাভ করে। পরবর্তীতে কাল পরিক্রমায় সারাদেশে জনপ্রিয়তা অতিক্রম করে এখন আন্তজার্তিক পর্যায়েও পরিচিত হয়ে ওঠেছে এই সাবিত্রী মিষ্টি।
ক্রেতা জানান, ‘বাপ-দাদার ও বন্ধু আত্মীয় স্বজনদের মুখ থেকে এই মিষ্টির কথা প্রথম শুনি। তখন থেকেই সাবিত্রী মিষ্টি কিনে নিজেরা খাই। আবার বিদেশে আত্মীয় স্বজনদের পাঠাতে হয়।’
এখন প্রতিবছর যে কোন উৎসব এলেই আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও অনুষ্ঠানে এই মিষ্টি বিনিময় ও খাবার আনন্দের চিরায়ত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেহেরপুরে প্রতিদিনই এই মিষ্টি বিক্রির ধুম পড়ে। মিষ্টিটির বিশেষত্ব হলো, শুধুমাত্র খাঁটি দুধকে নিদিষ্ট তাপমাত্রায় জ্বাল দিয়ে ঘন করে গুটি ছানা হলে, তা বিশেষ পদ্ধতিতে আরও জ্বাল দিয়ে সাবিত্রী মিষ্টি তৈরী করা হয়।
এখন ঠাকুরদাদার এই পেশা ধরে রেখেছে তিন প্রজন্মের পরের সন্তানেরা। বাজারে মিষ্টির কদর ও চাহিদা বাড়লেও পর্যাপ্ত দুধ ও জনবলের অভাবে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ মণ এর বেশি মিষ্টি তৈরী করতে পারেনা কারিগররা।
বিকাশ কুমার বলেন, ‘পহেলা বৈশাখসহ বিশেষ কোন দিনে মিষ্টির কদর বাড়ে। তাছাড়া দুধ ও কারিগরের অভাবে চাহিদামত মিষ্টি তৈরী ও সরবরাহ করতে পারি না। ১২৫ বছরের পুরানো এই মিষ্টিটি এখন পারিবারিক ও মেহেরপুরের ঐতিহ্য হওয়ায় আমরা এই পেশা ধরে রেখেছি।’
পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন জানান, ‘সাবিত্রী মিষ্টি আমাদের জেলার ঐতিহ্য। এই মিষ্টি ১৫০ বছর ধরে মানুষের মাঝে প্রিয় মিষ্টি হিসেবে এখনও রয়েছে।’
/এএস