বিশ্বজুড়ে

মিয়ানমারকে সহায়তা প্রত্যাহারের হুমকি জাতিসংঘের

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মিয়ানমারের ওপর থেকে সহায়তা প্রত্যাহার করে নেয়ার হুমকি দিয়েছে জাতিসংঘ। দেশটিতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের জাতিবিদ্বেষী নীতির কারণে এমন হুমকি দেয়া হয়েছে।

মিয়ানমারে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী নাট ওস্টবি মিয়ানমার সরকারকে চিঠি দিয়ে এই বার্তা জানিয়েছেন। ওই চিঠি পড়ে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, যেসব রোহিঙ্গারা অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয় তাদের ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন না এলে ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে দেবে জাতিসংঘ এবং তাদের মানবাধিকার অংশীদাররা।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাত বছর আগে রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের জন্য স্থাপন করা হয় আইডিপি ক্যাম্প। তখন থেকেই এই ক্যাম্পে সহায়তা দিয়ে আসছে জাতিসংঘ।

এছাড়া ২০১৭ সালের আগস্টে নতুন করে সহিংসতা শুরু হলে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে এখনও বহু রোহিঙ্গা রাখাইনের আইডিপি ক্যাম্পেই আছে। ৬ জুনের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মৌলিক অধিকার ও চলাফেরার স্বাধীনতা নিশ্চিত হলেই এখন থেকে সহায়তা দেয়া হবে।

২০১৭ সালে আইডিপি ক্যাম্প বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল মিয়ানমার। সেখানে প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার রোহিঙ্গা এবং কামান মুসলিমরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলাফেরা করতে হয় তাদের।

মিয়ানমারের সমাজ কল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী ড. উইন মিয়াত আয়কে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, পুরনো ‘বন্ধ থাকা’ এবং নতুন তৈরি করা ক্যাম্পগুলোতে একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সেখানকার লোকজনের মৌলিক সেবা বা জীবিকার কোন ধরনের সুযোগ নেই। এমনকি ক্যাম্পের অবস্থানও অপরিবর্তিত রয়েছে।

মিয়ানমারে সবচেয়ে নিগৃহীত হয়ে আসছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। ২০১২ সালের সহিংসতায় কয়েক লাখ রোহিঙ্গার বাড়ি-ঘর ধ্বংস করে দেয়া হয়। এরপরেও ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে আনুমানিক আরও প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা এখনও মিয়ানমারেই অবস্থান করছেন।

রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এমন কঠোর হুঁশিয়ারি দিল জাতিসংঘ। এর আগে দেশটির বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের অভিযোগ এনেছিল সংস্থাটি। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close