দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামবিশেষ প্রতিবেদন
মিরপুর পুলিশের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘খোঁজ নিয়েছেন’
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগের একটি সময়োপযোগী ও ব্যতিক্রমী উদ্যেগ ‘খোঁজ নিয়েছেন’ নগরবাসীর ব্যাপক নজর কেড়েছে করোনা ভাইরাসের এ ক্রান্তিকালে। মিরপুর পুলিশের ‘খোঁজ নিয়েছেন’ প্ল্যাটফর্ম থেকে বুধবার ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ১৬শ’রও বেশি নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের বাসায় জরুরি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো পরিবারের কাছে শিশুখাদ্যও পৌঁছে দিয়েছে মিরপুর পুলিশ।
চলমান করোনা ভাইরাস সংকটে কাজ হারিয়ে বা বেকার হয়ে যারা সাময়িক সমস্যায় পড়েছেন কিন্তু কারো কাছে সরাসরি সাহায্য চাইতে পারছেন না তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে মিরপুর পুলিশ। মিরপুর এলাকায় বস্তি, ভাসমান ও দুস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী, রান্না করা খাবার, ইফতার বিতরণের পাশাপাশি ‘খোঁজ নিয়েছেন’ উদ্যোগ চলছে নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য।
ডিএমপি মিরপুর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মোস্তাক আহমেদ জানান, তাদের কাছে বিভিন্ন সোর্স থেকে এসব পরিবারের বিপর্যয়ের তথ্য আসতে থাকে। তারা তাদের নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি ‘খোঁজ নিয়েছেন’ শিরোনামে এ প্ল্যাটফর্ম শুরু করেন বিপর্যস্ত নগরবাসীর কাছে পৌঁছানোর জন্য। শুধু মিরপুর নয় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এ প্ল্যাটফর্মটি নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছে এবং তাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
তিনি জানান, এ উদ্যোগটি সমন্বয়ের জন্য সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয় দারুসসালাম জোনের অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকীকে। এডিসি মাহমুদা আফরোজ লাকী জানান, ‘খোঁজ নিয়েছেন’ প্ল্যাটফর্মটি মিরপুরে তাদের কার্যক্রম শুরু করলেও এখন তারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে খাদ্য সহায়তার জন্য নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর ফোন পাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে সংশ্নিষ্ট এলাকার থানা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মিরপুর পুলিশের এ প্ল্যাটফর্ম তাদের সাহায্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে সারা ঢাকা শহরে।
তিনি জানান, নিয়মিত খাদ্যের বাইরে পরিবারগুলো থেকে শিশুখাদ্যও চাওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে শিশুখাদ্য সংগ্রহের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি, ফিন্যান্স শ্যামল কুমার মুখার্জি ব্যক্তিগতভাবে মিরপুর পুলিশকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন।এ প্লাটফর্মটি কেবল ত্রাণ বিতরণের কাজেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেনি। এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘খোঁজ নিয়েছেন’ প্ল্যাটফর্ম থেকে করোনা ভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে সচেতনতা বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ প্রচারণা চালাচ্ছে।ডিএমপির মিরপুর বিভাগের কর্মকর্তারা সমাজের বিত্তবানদের আহ্বান জানান, তারা যেন দরিদ্র, স্বজন ও প্রতিবেশীর খোঁজ নেন এবং অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান।
মাহমুদা আফরোজ লাকী জানান, তাদের সরকারি নম্বরটি বাসিন্দাদের কাছে রয়েছে। এজন্য লোকজন আপদে-বিপদে তাদের ফোন দেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংকটকালে এলাকার নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের খাবার চাওয়ার বিষয়টি তাদের ভাবিয়ে তোলে। এখন তারা পুলিশি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিন নিভৃতে মানুষের বাসায় বাসায় খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।বাংলাদেশ কর্পোরেট ফোরামের প্রেসিডেন্ট ও ইগলুর গ্রুপ সিইও কামরুল হাসান বলেন, মিরপুর পুলিশের এ ধরনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এবং করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে মানুষের অবর্ণনীয় বিপদে সময়োপযোগী একটি পদক্ষেপ। তিনি বাংলাদেশ কর্পোরেট ফোরাম এবং এর সদস্যরা ‘খোঁজ নিয়েছেন’ প্ল্যাটফর্মকে কার্যকর রাখতে মিরপুর পুলিশকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দেন।
/এন এইচ