দেশজুড়ে
মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছেন আজহারী
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ‘পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে’ বাংলাদেশে এ বছরের তাফসির প্রোগ্রামের ইতি টানতে হচ্ছে জনপ্রিয় ধর্মীয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীকে। তাই মার্চ পর্যন্ত তাঁর বাকি প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হয়েছে। গবেষণার কাজে আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছেন পিএইচডিতে অধ্যয়নরত আজহারীকে।
মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ‘আমরা আমাদের জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়ে দিই অন্যকে হিংসা করতে করতে। নিজেরা কাজ না করে অন্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে আমরা মহাব্যস্ত। আসলে অপপ্রচার করে তেমন কোনো লাভ নেই। অপপ্রচারে আমি কখনো মনঃক্ষুণ্ণ হই না। আমার বিশ্বাস, আপনারাও হবেন না। কারণ, অপপ্রচারগুলোই আমাদের প্রচারণার দায়িত্ব পালন করেছে, আলহামদুলিল্লাহ। হকের পথে বাধা-বিপত্তি আসবেই। এটাই স্বাভাবিক। যে পথে কাঁটা নেই সেটা পথ নয়, সেটা কার্পেট। আর কার্পেটে হেটে মজলিশে পৌঁছানো যায়, মনজিলে নয়।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা লিখেন আজহারী।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি তাঁকে ‘জামায়াতের প্রোডাক্ট’ আখ্যা দিয়ে সামাজিকভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। পরদিন সেই বক্তব্যের জবাব দিয়ে স্ট্যাটাস দেন আজহারী। তিনি বলেন, “আমি কোনো দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নই। আর কোনো রাজনৈতিক দলের অর্থায়নে আমার শিক্ষাজীবনও কাটেনি। মিথ্যাচার যেন এ দেশে মহামারিতে রূপ নিয়েছে। আর সেটা যখন প্রকাশ্যে, গণমাধ্যমে, দেশের কোনো উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীলের মুখ থেকে প্রকাশ পায়, তখন আফসোস আর হেদায়েতের দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।’
“নিজের চিন্তা আর মতের বিরুদ্ধে গেলেই এ দেশে একটা স্বস্তা ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। আর সেটা হলো ‘জামায়াত-শিবির’। এবার আপনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হোন অথবা মনেপ্রাণে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হোন। দ্যাট ডাজেন্ট মেটার। ভিন্নমতকে দমনের এই অপকৌশল পুরো জাতির ভাগ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।”
এরপর আজ দুপুরে স্ট্যাটাস দেন আজহারী। তাঁর সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ..
প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা
পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে, এখানেই এবছরের তাফসির প্রোগ্রামের ইতি টানতে হচ্ছে। তাই, মার্চ পর্যন্ত আমার বাকী প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হল। রিসার্চের কাজে আবারো মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ করে দিলে, আবারও দেখা হবে ও কথা হবে কুরআনের মাহফিলে ইনশাআল্লাহ।
এবছর বেশীর ভাগ প্রোগ্রামগুলোতেই পারিবারিক ও সামাজিক ক্রাইসিস নিয়ে কথা বলেছি, পাশাপাশি কয়েকটি সূরার তাফসিরও করেছি। আশাকরি, আলোচনা গুলো থেকে আপনারা উপকৃত হবেন। পরিবারের সবাই মিলে আলোচনাগুলো শুনুন এবং কথাগুলো বাস্তব জীবনে মেনে চলার চেষ্টা করুন। তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে, আমাদের পরিবার ও সমাজ সুখময় এবং শান্তিময় হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।
আমি একজন নগন্য মানুষ। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ছাত্র। কুরআনের ছাত্র হয়েই বেঁচে থাকতে চাই ও নিরলস কাজ করে যেতে চাই। তাই সুপ্রিয় শ্রোতাদেরকে বলব, প্লিজ আমাকে নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি করবেন না। আমাকে জড়িয়ে কোন ব্যাপারে কাউকে গালাগালি করবেন না, অন্য কোন মতাদর্শের আলেমদেরকে হেয় বা ছোট করে কিছু বলতে যাবেন না। যদিও তাদের কেউ কখনো আমাকে ছোট করে কথা বলে। অনুরুপ ভাবে, কোথাও আমাকে ডিফেন্ড করে তর্ক বা কমেন্ট করতে চাইলে, ভদ্রতা বজায় রেখে, যৌক্তিক ভাবে এবং বিনয়ের সাথে সেটা করুন। সত্য একদিন উন্মোচিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে, দেশের আপামর জনতার যে ভালোবাসা পেয়েছি, জানিনা সিজদায় পড়ে কতটুকু অশ্রু ঝড়ালে এবং কোন ভাষায় শোকরগোজার হলে এর যথাযথ শুকরিয়া আদায় হবে। মালিকের দরবারে আলীশানে লাখো কোটি শুকর এবং সুজুদ। ওয়ালহামদু লিল্লাহি ‘আলান্নি’আম।
প্রোগ্রামগুলো বাস্তবায়নে যারা সার্বিক সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবার জন্য রইল আন্তরিক ভালোবাসা ও দোয়া। বিশেষ করে পুলিশ, প্রশাসন এবং স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রোগ্রামগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা উত্তম প্রতিদান দান করুক।
আমার এ জীবনের ছোট্ট অভিজ্ঞতায় যা দেখলাম, সেটা হল: আমরা আমাদের জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়ে দেই অন্যকে হিংসা করতে করতে। নিজেরা কাজ না করে অন্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে আমরা মহা ব্যস্ত। আসলে, অপপ্রচার করে তেমন কোন লাভ নেই। অপপ্রচারে আমি কখনো মন:ক্ষুন্ন হইনা। আমার বিশ্বাস আপনারাও হবেন না। কারন অপপ্রচারগুলোই আমাদের প্রচারণার দায়িত্ব পালন করেছে আলহামদুলিল্লাহ। হক্বের পথে বাঁধা, বিপত্তি আসবেই। এটাই স্বাভাবিক। যে পথে কাঁটা নেই সেটা পথ নয়, সেটা কার্পেট। আর কার্পেটে হেটে মজলিশে পৌঁছানো যায়, মনজিলে নয়।
মন্তব্য কখনো গন্তব্য ঠেকাতে পারেনা।
তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লাহ…”
/আরএম