আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
মাদকের প্রতিবাদ করায় আশুলিয়ায় যুবককে হত্যা; ছাত্রলীগ ও যুবলীগনেতা সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আশুলিয়ায় শাহজাদা খন্দকার মনাকে (৫৫) কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা ও যুবলীগ নেতা সহ ১২ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার ৪ জনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ডেন্ডাবর নতুন পাড়া এলাকার মৃত নুরুল হক খন্দকারের ছেলে শাহজাদা খন্দকার মনা নিজ বাড়ির পাশে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হন।
পরে গভীর রাতে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের ভাই শাহাবুদ্দিন খন্দকার পিন্টু ও তার স্ত্রী আলেয়া বেগম। মনা পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান ছিলেন।
পরে শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) রাতে আশুলিয়া থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ভাই শাহাবুদ্দিন খন্দকার পিন্টু।
মামলার আসামিরা হলেন- ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর নতুন পাড়া এলাকার আলাউদ্দিন মিস্ত্রির ছেলে আল আমিন ওরফে বাবু মিজি (২৬), একই এলাকার জমির মোল্লার ছেলে নুরুজ্জামান (৩৫), শাহজাহানের ছেলে ও আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ টিটু (৩০), শাহজাহান সরকারের ছেলে ও আশুলিয়া থানা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নেতা সাইফুল ওরফে ছোট সাইফুল (৩৮) ও কবির হোসেনের ছেলে রনি (২৪), জয়পুরহাট জেলার সদর থানার রিপন হোসেনের ছেলে রকি (২১), নড়াইল জেলার নড়াগতি থানার খাশিয়াল গ্রামের গোলাম রসুলের ছেলে রেজাউল ইসলাম পারভেজ (১৯), মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার কচুয়া গ্রামের লিটনের ছেলে মেহেদী হাসান নাজমুল (২৫), একই জেলার সদর থানার ইসলামপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে ও যুবলীগকর্মী আরিফ (৩০) ও শিবালয় থানার তেওতা গ্রামের মৃত আক্তার হোসেনের ছেলে জুয়েল (৩০), টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার সিনন্দীন গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে সুমন (২৫) ও একই জেলার দেলদুয়ার থানার নান্দুলিয়া গ্রামের মৃত আমির খানের ছেলে রাব্বী (১৯)। তারা সবাই ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর নতুন পাড়া এলাকার বর্তমান বাসিন্দা।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত চারজন হলেন- জুয়েল, নুরুজ্জামান, মেহেদী হাসান নাজমুল ও রেজাউল ইসলাম পারভেজ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ডেন্ডাবরের ওই এলাকায় একটি ক্লাব তৈরি করে বিভিন্ন সময় টিটু ও ছোট সেলিমসহ আসামিরা গানবাজানা, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করতেন। আশেপাশের বাসিন্দাদের সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় মনা তাদের এসব বন্ধ করতে বলে। পরে বৃহস্পতিবার আবার গেলে মনাকে মারধর করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মনাকে মারার পর এলাকায় মিছিল করে তারা। ক্লাব ঘরকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতো অভিযুক্তরা বলে জানান এলাকাবাসী।
আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শামিম বলেন, আটক জুয়েল, নুরুজ্জামান, সুমন, মেহেদী নামে কোন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে আমি চিনি না। শুধু আরিফকে চিনি ভালো করে। তিনি যুবলীগ করেন। টিটু আমার কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি যদি অপরাধি হয় তাহলে শাস্তি হবে। মামলা হওয়া মানেইতো তিনি অপরাধী না।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউর রহমান জিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গতকাল রাতেই নিহতের ভাই শাহাবুদ্দিন খন্দকার পিন্টু একটি মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার চারজনকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
/আরএম