আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য

মহামারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ধুকলেও ফুলে ফেঁপে উঠছে চীনের অর্থনীতি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ধুকলেও ফুলে ফেঁপে উঠছে চীনের অর্থনীতি। টানা তৃতীয় মাসের মতো আগস্টেও চীনের রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কমেছে আমদানি। বাণিজ্যিক অংশীদার অনেক দেশ করোনাভাইরাসের লকডাউন শিথিল করায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চীনা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।

চীনের শুল্ক দফতরের প্রকাশিত সোমবারের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে দেশটির রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চের পর এটিই একমাসে দেশটির রফতানি বৃদ্ধির রেকর্ড।

শক্তিশালী এই রফতানি বৃদ্ধির ফলে চীনা অর্থনীতির দ্রুত এবং ভারসাম্যপূর্ণ পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত মিলেছে। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের লুইস কুইজস বলেছেন, প্রত্যাশার চেয়েও ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে চীনের রফতানি। এই বৃদ্ধি বিশ্ব বাণিজ্যের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ঘটছে। এভাবে বিশ্ববাজারে চীনের শেয়ার বাড়ছে।

জুলাইয়ে দেশটির রফতানি ৭ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার পর পরবর্তী মাসে তা ৭ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা প্রত্যাশা করলেও সেটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তবে প্রত্যাশার তুলনায় দেশটির আমদানি ২ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আমদানি শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করা হলেও জুলাই মাসে তা কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ।

গত সপ্তাহে উৎপাদন কার্যক্রমের ওপর চালানো একটি বেসরকারি জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, বিদেশি চাহিদা ধীরে ধীরে চাঙ্গা হওয়ায় চীনা কারখানাগুলোতে চলতি বছরের আগস্টে নতুন নতুন রফতানি আদেশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।

বিদেশি চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটিতে উৎপাদন আরও বাড়ানো হয়েছে। চীনের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির এই ঘটনা গত এক দশকের মধ্যে অন্যতম।

কিছু কিছু বিশ্লেষক করোনাভাইরাস মহামারিতে সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করলেও চীনের মেডিক্যাল সরঞ্জাম এবং ইলেক্ট্রনিক পণ্যের রফতানিতে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি।

অন্যদিকে, দেশটিতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে আসায় অপ্রত্যাশিতভাবে আমদানি হ্রাস পেয়েছে। তবে আমদানি মোটাদাগে প্রায় স্থিতিশীল ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের জুলিয়ান ইভানস-প্রিটচার্ড।

তিনি বলেন, ঋণের প্রবৃদ্ধি এখনও ঊর্ধ্বমুখী এবং অবকাঠামোগত উদ্দীপনা এখনও বাড়ছে। আগামী মাসগুলোতে আমদানির পরিমাণ বাড়তে পারে।

গত মাসে চীনের উদ্বৃত্ত বাণিজ্য ৫৮ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা জরিপের পূর্বাভাসে ৫০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে কঠোর লকডাউন ও নানা ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপের ফলে প্রায় থমকে যায় বিশ্ব বাণিজ্য।

দীর্ঘ কয়েকমাসের বিধি-নিষেধ শিথিল করে বর্তমানে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফেরার চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়েই। আর এতেই ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে চীনের রফতানি। সূত্রঃ রয়টার্স।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close