স্বাস্থ্য
মধুপুরে গরিবের গ্রামে আমেরিকান ডাক্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ডাক্তার ভাই’ নামে পরিচিত ডা. এড্রিক বেকারের কথা কি মনে আছে? গ্রামের হতদরিদ্র মানুষকে চিকিৎসা সেবাদানের ব্রত নিয়ে যিনি সুদূর নিউজিল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে উড়ে এসেছিলেন।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা করেই একে একে কাটিয়ে দিয়েছিলেন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ৩২টি বছর। ১৯৯৬ সালে টাঙ্গাইলের মধুপুরের নিভৃতপল্লী কাইলাকুরিতে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হেলথ কেয়ার প্রজেক্ট’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এড্রিক বেকার।
২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের কাদামাটি-টিন দিয়ে গড়া কক্ষে মারা যান বেকার। সে সময় তার বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। এড্রিক বেকারের মৃত্যুর পর, গণস্বাস্থ্যের কেন্দ্রের একজন মেডিক্যাল অফিসার, দুজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও কয়েকজন প্যারামেডিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবাদান অব্যাহত রেখেছিলেন।
গত বছরের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের এক চিকিৎসক দম্পতি বেকারের প্রতিষ্ঠিত টাঙ্গাইলের কাইলাকুরি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছেন। তারা হলেন- ডা. জেসন (৪৫) এবং তার স্ত্রী ডা. মেরিন্ডি (৪৪)। লুঙ্গি-ফতুয়া পরে ডা. জেসন আর সালোয়ার কামিজ পরে ডা. মেরিন্ডি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন গ্রামের মানুষদের। বর্তমানে এই দম্পতি তাদের চার সন্তান নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে একটি মাটির ঘরে বসবাস করছেন। তাদের সন্তানরা পড়ছে স্থানীয় একটি মিশনারি স্কুলে অন্যান্য বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে।
বা”চারাও গ্রামের পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে চমৎকারভাবে। ডা. জেসন ও ডা. মেরিন্ডি দুজনই লেখাপড়া করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ওকলাহোমায়। ক্যালিফোর্নিয়ার নেটিভিডেড মেডিকেল সেন্টারে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দুজনের পরিচয় এবং ২০০৫ সালে পরিণয়।
এ বিষয়ে নূরানী কনস্ট্রাকশনের পরিচালক খন্দকার তারিকুল ইসলাম তারেক জানায়, আমাদের বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাইলাকুড়ি গ্রামে যুক্তরাষ্ট্রের এক চিকিৎসক দম্পতি বেকারের প্রতিষ্ঠিত টাঙ্গাইলের কাইলাকুরি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসেন ডা. জেসন এবং তার স্ত্রী ডা. মেরিন্ডি । তারা যে এইরকম প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় গরীব মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে এটি একটি মানবতার উজ্জল দৃষ্টান্ত। তবে এই হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সরকারের জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
/এএস