দেশজুড়ে
ভেজা চুল কোনো কোনো সংস্কৃতিতে ‘যৌন সংকেত’?
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নারী সাংবাদিকের পোশাক সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিয়ে বেশকিছু পরামর্শ দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নজরুল ইসলাম।
সোমবার(০২ ডিসেম্বর) রাতে বেরোবি’র গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ওই শিক্ষকের মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
কুড়িগ্রামের জেলা পরিষদের ডাক বাংলো মিলনায়তনে নিউজ নেটওয়ার্ক এবং উদয়ঙ্গুর সেবা সংস্থা নীলফামারীর উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী ২৫ নারী সাংবাদিকদের কর্মশালা চলছিল। সোমবার ‘ভায়োলেন্স এন্ড হ্যারেজমেন্ট অ্যাগনেস্ট উইমেন ইন দ্যা নিউজ মিডিয়া: এ গ্লোবাল পিকচার’ শীর্ষক এ কর্মশালায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও নারী সাংবাদিকের নিরাপত্তাবিষয়ক সেশনে পোষাক সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিয়ে কিছু পরামর্শ দেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন- ‘ফ্ল্যাট স্যান্ডেল, জুতো পরিধান করতে হবে, তা দৌড়াতে সুবিধাজনক। বিয়ের চিহ্ন স্বরুপ আংটি অথবা অন্য কিছু পরিধান করতে হবে, দামী অলংকার পরিধান পরিহার করতে হবে, ভেজা চুলে বাহিরে যাওয়া যাবে না, কোন কোন সংস্কৃতিতে এটি যৌন সংকেত। ঝুলানো গলার হার বা অন্য কিছু যা সহজে টান দেয়া যায় তা পরিহার করতে হবে। বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরতে হবে, যদি প্রয়োজন মনে হয়।’
মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের একটি স্লাইডের ছবি কুড়িগ্রামের সাংবাদিক লাইলী বেগম সোমবার বেলা দেড়টার দিকে তার ফেসবুকে পোস্ট করলে মুহূর্তে তা ছড়িয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের এ ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়ে কঠিন সমালোচনা করেন অনেকে।
অপরাজিতা সংগীতা নামে এক নারী তার ফেসবুকে লিখেন, ‘আসুন আমরা জেনে নেই যৌন হয়রানি থেকে বাঁচার নয়া তরিকা। এই তরিকা নাজিল করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. নজরুল ইসলাম। কুড়িগ্রামের সাংবাদিকদের জন্য কর্মশালা করাতে গিয়ে এই তরিকা প্রসব করান!’
প্রশিক্ষনার্থী সাংবাদিক লাইলী বেগম অভিযোগ করে বলেন, ওই শিক্ষক প্রশিক্ষণে আপত্তিকর কিছু পয়েন্ট তুলে ধরলে আমি নিষেধ করা স্বত্ত্বেও তিনি আমাকে পাত্তা দেননি।
এ ব্যাপারে শিক্ষক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স মিডিয়া ফাউন্ডেশন, এবং ইন্টারন্যাশনাল নিউজ সেফটি ইন্সটিটিউটসহ আর্ন্তজাতিক সংস্থার কিছু মেনুয়্যাল ঘেঁটে আমি স্লাইড তৈরি করে পয়েন্ট তুলে ধরেছি প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে। এছাড়া ইউনেস্কো থেকে নারী সাংবাদিকদের জন্য সেফটি গাইড লাইন আছে, সেখান থেকেও কিছু পয়েন্ট নিয়েছি। আমার নিজের বানানো কিছু নয়। আর প্রশিক্ষণের সময় কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। তখন প্রশ্ন তুললে আমি যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারতাম। আমি নারী সাংবাদিকদের বোঝাতে চেষ্টা করেছি তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি তাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে।’
/আরএম