দেশজুড়ে
ভুল চিকিৎসায় সাংবাদিকের স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: নওগাঁ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক করতোয়ার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি মো. নবির উদ্দিনের স্ত্রী নীলুফা বেগমের (৬০) নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে পারিবারিকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি একটি রিপোর্টও দাখিল করেছে, যা মৃতের পরিবার প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই সাথে একটি নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে পরিবার।
নবির উদ্দিন জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে আনুমানিক আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী নীলুফা বেগমের সামান্য শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়। শ্বাসকষ্ট যাতে আর বেশি না হয় তার জন্যে সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে অক্সিজেন দেয়ার জন্য নিয়ে যান তিনি। অত্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। ভর্তির পর রোগী নিজেই একাই ওয়াশরুম পর্যন্ত যান। সেখান থেকে ফিরে এলে তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়। তখনও তার অবস্থা স্বাভাবিক ছিল।
তিনি আরও বলেন, অক্সিজেন দেয়ার পর সিনিয়র স্টাফ নার্স জবা রানী বাড়ৈ পরবর্তীতে একটি বড় সিরিঞ্জে করে ওষুধ (স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ বলে মনে হয়েছে) ক্যানোলা ছাড়াই সরাসরি ভেনে (আইভি) পুশ করেন। ইনজেকশন পুশ করার সাথে সাথেই রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে এবং মাত্র ২/৩ মিনিটের মধ্যে রোগীর মৃত্যু ঘটে। চিকিৎসক এবং নার্সরা তড়িঘড়ি করে মৃত্যুর সনদপত্র দিয়ে মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, ওইদিন চিকিৎসক আইরিন পারভিনের দেওয়া ব্যবস্থাপত্রে ইনজেকশন সার্জেল এবং ল্যাসিক্স লিখা ছিল যা পরবর্তীতে জানা যায়। পরবর্তিতে এ নিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটির কাছে চিকিৎসক ও নার্সদের অসংলগ্ন কথাবার্তা নানা সন্দেহের অবকাশ সৃষ্টি করে বলে তিনি অভিযোগ করেন। বাস্তবিকপক্ষে ওইদিন নার্স জবা রাণী তার কাউন্টার থেকে ইনজেকশনটি ভরে এনে রোগীর হাতে কোনো ক্যানোলা না করে দ্রুত পুশ করেন। কিন্তু তদন্ত কমিটির কাছে নার্স জবা রাণী বাড়ৈ সার্জেল এবং ল্যাসিক্স নামের দুটি ইনজেকশন পৃথকভাবে ক্যানোলার মাধ্যমে পুশ করা হয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তবে কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান নার্স শিরিন বলেছেন, জবা রাণী শুধুমাত্র সার্জেল ইনজেকশনই পুশ করেছেন।
নবির উদ্দিন আরও অভিযোগ করেন, চিকিৎসক এবং সেবিকাদের বিভিন্ন অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং রোগীর আপনজন ও পার্শ্ববর্তী রোগীদের পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত যে, অপচিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসার কারণেই তার স্ত্রী নীলুফা বেগমের মৃত্যু ঘটেছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় পরিচালকের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।