দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

ভারতীয় নারী জঙ্গির কাছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র!

নব্য জেএমবির নারী শাখার ভারপ্রাপ্ত প্রধান আটক

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ  ঢাকায় আটক এক ভারতীয় নারী জঙ্গির কাছে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র মিলেছে। ওই নারী কীভাবে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছে তা খতিয়ে দেখছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। ওই নারী ৩ মাস ধরে বাংলাদেশের নব্য জেএমবির নারী শাখার ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিল। ওমান প্রবাসী বাংলাদেশি এক তরুণকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস করার চেষ্টা করেছিল আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম (২৫) নামে ভারতীয় ওই নারী।

শনিবার (১৮ জুলাই) সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাজধানীর সদরঘাট থেকে ভারতীয় নারী আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিমকে (২৫) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে আসা যাওয়া করে, গত বছরের ওমান প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক আমির হোসেন সাদ্দামকে মুঠোফোনে বিয়ে করে সে। ওই বছরের আগস্ট থেকে সে বাংলাদেশে বসবাস করা শুরু করে। বাংলাদেশে এসে নারী নব্য জেএমবি’র সাংগঠনিক কাজকর্ম করছিল তাসনিম।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারের সময় এই নারীর কাছ থেকে ভারতীয় পাসপোর্ট, একটি বাংলাদেশি জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট, একটি বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র এবং দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’

গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের নব্য জেএমবি’র নারী শাখার প্রধান আসমানী খাতুন ওরফে আসমাকে মতিঝিলের কমলাপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি। এই ঘটনায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা হয়। এরপর শিরিন আক্তার নামে আরও এক নারীকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় এই নারীর সংশ্লিষ্টতা পায়। এরপর তাকে গ্রেফতার করলো সিটিটিসি।

সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জান্নাতুত তাসনিম ধর্মান্তরিত মুসলিম। পশ্চিমবঙ্গের হুগলির ধনিয়াখালি থানা এলাকার পশ্চিম কেশবপুর গ্রামে তার বাড়ি। তার নাম ছিল প্রজ্ঞা দেবনাথ। বাংলাদেশে অবৈধভাবেই সে প্রবেশ করে। ২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় অনলাইনে সে ধর্মান্তরিত হয়। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে সে অনলাইনে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। এর একপর্যায়ে নব্য জেএমবির নারী শাখার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। তাকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশ্বস্ততা যাচাই করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।

সিটিটিসির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইমরান বলেন, আয়েশাকে চারদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সে রিমান্ডে আছে। আমরা তার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই বাছাই করছি। সে কীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করলো তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গ্রেফতার এড়াতে এই নারী বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় পরিচয় গোপন করে শিক্ষকতা করছিল সে।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close