আমদানি-রপ্তানীদেশজুড়ে
ভারতীয় ডিমের প্রথম চালান, দাম পড়েছে ৭ টাকা ২৩ পয়সা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: পাশের দেশ ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার দেড় মাসের বেশি সময় পর ডিমের প্রথম চালান দেশে এসেছে। শুল্কসহ প্রতিটি ডিমের দাম পড়েছে ৭ টাকা ২৩ পয়সা। আজ সোমবার একটি ট্রাকে করে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে এই ডিম বাংলাদেশে ঢুকেছে। যে প্রতিষ্ঠান এই ডিম নিয়ে এসেছে, তাদের আমদানির অনুমতি ছিল এক কোটির। প্রথম চালানে তারা ডিম নিয়ে এসেছে ৬১ হাজার ৯৫০টি। স্থলবন্দরের প্রক্রিয়া শেষে গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে ডিমের ট্রাক বন্দর ছাড়ে।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর এর প্রথম চালান হিসেবে ঢাকার বিডিএস করপোরেশন ভারতীয় মালবাহী একটি ট্রাকে ৬১ হাজার ৯৫০টি ডিম আমদানি করেছে, যার প্রতির আমদানিমূল্য পড়েছে ৫ টাকা ৪৩ পয়সা। শুল্ক ১ টাকা ৮০ পয়সা। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতীয় অংশের পরিবহন খরচ। তাতে মোট দাম পড়েছে ৭ টাকা ২৩ পয়সা। এরপর দেশের অংশের পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ যোগ হবে।
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) মো. রেজাউল করিম বলেন,গতকাল সন্ধ্যায় একটি ট্রাকে করে ভারত থেকে প্রথম ডিমের চালান এসেছে। ভারতীয় ট্রাক থেকে বাংলাদেশের ট্রাকে ওই ডিম রাত ১০টার দিকে বন্দর ছেড়ে গেছে।
ডিম আমদানিকারকের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এমই এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি সৈয়দ মহিদুল হক বলেন, ‘এক কোটি ডিম আমদানির অনুকূলে প্রথম চালানে ৬১ হাজার ৯৫০টি আমদানি করেছে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। শুল্কসহ প্রতিটি ডিমের আমদানিমূল্য সাত টাকার মতো পড়েছে। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ যুক্ত হবে।’
বাংলাদেশে ডিম আমদানি নিষিদ্ধ। তবে প্রয়োজন হলে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানির অনুমতি দিতে পারে। মাস দেড় আগে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। পরে আরও দুই ধাপে মোট ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। বাজারে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
ঢাকায় খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মান ও পদভেদে বড় বাজারে কোথাও আরেকটু বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, আমদানি হওয়ার ফলে এখন দাম আরও কিছুটা কমে আসতে পারে। তবে সে জন্য ডিম আমদানির ধারাবাহিতা প্রয়োজন। যে পরিমাণে ডিম দেশে এসেছে, তা একেবারেই সামান্য। বাজারে প্রভাব রাখতে গেলে আরও ডিম আসা প্রয়োজন।
প্রথম দফায় ডিম আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠান মীম এন্টারপ্রাইজের মালিক ইয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক দিন ধরে ডিম আমদানি না হওয়ার কারণে কাগজপত্র নিয়ে নানা জটিলতা ছিল। তা এখন অনেকটা কেটে গেছে। আমাদের ডিমও আসার অপেক্ষায় আছে।’ যেহেতু এক প্রতিষ্ঠানের ডিম এসেছে, পর্যায়ক্রমে অন্যগুলোও আসবে বলে জানান তিনি।
কাস্টমস ট্যারিফের তালিকা (২০২৩-২৪) অনুযায়ী, ডিমের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ রয়েছে। মোট শুল্ক-করভার ৩৩ শতাংশ। ফলে ১০০ টাকার ডিম আমদানিতে লাগে আরও ৩৩ টাকা। এ ছাড়া সরকার ডিম আমদানি করার জন্য এভিয়ান ভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুমুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানিসহ মোট চারটি শর্ত দিয়ে রেখেছে।