বিশ্বজুড়ে
ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তুরস্কে পাঠাবে ট্রাম্পের
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সিরিয়ায় তুরস্কের সামরিক অভিযান নিয়ে আঙ্কারার সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ ১৬ অক্টোবর বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-কে তুরস্কে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প জানান, উচ্চপর্যায়ের এ সফরে সিরিয়ায় তুরস্কের চলমান অপারেশন পিস স্প্রিং এবং সিরিয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, কাল (বুধবার) পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-কে নিয়ে তুরস্ক সফরে যাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সফরের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। বৈঠকে সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতির জন্য আঙ্কারার প্রতি আহ্বান জানাবেন পেন্স। আহ্বানে সাড়া না দিলে অব্যাহত নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে তুরস্ককে সতর্ক করে দেওয়া হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কে পৌঁছে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আওয়াজ তুলবেন। তিনি সমঝোতার শর্তগুলোও তুলে ধরবেন।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এ অঞ্চলে নিরাপত্তা বজায় রাখা, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং আইএস জঙ্গিদের ধরপাকড় অব্যাহত রাখতে ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরের প্রাক্কালে মঙ্গলবার সিরিয়া অভিযান নিয়ে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। আঙ্কারা সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে সাক্ষাত করা নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিনি সাক্ষাত করবেন বলে জানিয়েছে তুর্কি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।
আজারবাইজানের বাকুতে তার্কিক কাউন্সিলের সপ্তম সম্মেলন শেষে ফেরার পথে এরদোয়ান বলেন, সিরিয়ার তুর্কি সীমান্ত এলাকায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে অনেক চাপ এসেছিল। কিন্তু আঙ্কারা নিষেধাজ্ঞার ভয়ে উদ্বিগ্ন নয়। তুরস্ক এসবের পরোয়া করে না। সীমান্তে সন্ত্রাসের করিডোর উৎখাতে আঙ্কারা বদ্ধপরিকর।
পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে এরদোয়ান বলেন, তারা অভিযান বন্ধে আমাদের ওপর চাপ দিচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার। আমরা কোনও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এর আগেও তুরস্কের প্রতি সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ওই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে এরদোয়ান বলেন, আঙ্কারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একই টেবিলে বসবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর তুর্কি সীমান্তবর্তী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্ক। এ অভিযানের মাধ্যমে অঞ্চলটি থেকে আইএস জঙ্গি ও কুর্দি বিদ্রোহীদের বিতাড়িত করে সেখানে একটি সেফ জোন প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী আঙ্কারা। এ সেফ জোনে দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কে বসবাসরত সিরীয় শরণার্থীদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে চায় আঙ্কারা। তুর্কি অভিযানের আগে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে অভিযান শুরুর পর তুরস্কের দুইজন মন্ত্রী এবং তিনজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। সীমালঙ্ঘন করলে দেশটির বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। সূত্র: ডেইলি সাবাহ, আল জাজিরা।
#এমএস