শিক্ষা-সাহিত্য

ভর্তি জালিয়াতি রুখতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ উচ্চশিক্ষা অর্জনে দেশের শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে ভর্তিচ্ছুদের তুলনায় আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় ভর্তির এই যুদ্ধ বেশ কঠিন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভর্তি নিয়ে অসৎ বাণিজ্যে যুক্ত কিছু চক্রের সন্ধান পাওয়ায় এবার বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বেশ সক্রিয়।

আসছে ২৭ আগস্ট শেষ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তির আবেদনের সময়সীমা। পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখ ঢাবির গ-ইউনিটের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিপরীক্ষা। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও প্রায় একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে ভর্তিপরীক্ষা। তাই প্রশ্নফাঁস ও ভর্তি জালিয়াতির মতো অপরাধ রুখে দিতে এখন থেকেই কৌশল নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়, ভর্তি জালিয়াতি ও প্রশ্নফাঁস বা ভুয়া প্রশ্নফাঁসের অপরাধীরা ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। তাই গেলো কয়েকবারের মতো এবারও ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ ‘রাডার স্ক্যানিং’ এর আওতায় থাকবে বলে জানান পুলিশের বিশেষায়িত বিভাগগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল বিভাগের সাইবার অপরাধ ও নিরাপত্তা ইউনিটের উপ-পুলিশ কমিশনার আ ফ ম আল কিবরিয়া সংবাদমাধ্যমে বলেন, ভর্তি জালিয়াতি বা প্রশ্নফাঁস বা ভুয়া প্রশ্নকে আসল প্রশ্ন বলে ফাঁস করার মতো অপরাধ এখন হয়। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি। সম্ভাব্য সব বিষয় আমলে নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের অপরাধ অনলাইন বা সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে অনেক বেশি হয়। তাই ভার্চুয়াল জগতে বিশেষ মনিটরিং করছি আমরা। আগের মামলার যেসব পলাতক আসামি আছে তাদের ধরতেও সতর্কতা অবলম্বন করছি।

এদিকে অনলাইন ছাড়াও অফলাইনেও সংঘটিত হয় ভর্তি সংক্রান্ত অপরাধ। বিশেষ করে ভর্তি সম্পর্কিত অপরাধে বিভিন্ন কোচিংসেন্টারের বিষয় উঠে এসেছে। কোচিংসেন্টারে কর্মরত ব্যক্তিদের এমন অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজন হলে কোচিংসেন্টারগুলোর দিকেও বিশেষ নজর রাখা হবে বলে জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

এবার কোচিং সেন্টারগুলোকে বিশেষ নজরদারিতে আনা হবে উল্লেখ করে আ ফ ম আল কিবরিয়া বলেন, সাইবার ক্রাইম ইউনিট মূলত সাইবার বিষয়ক অপরাধ নিয়ে কাজ করে। তবুও তদন্ত করতে গিয়ে বা কোনো সাইবার কেসেরই তদন্ত করতে গিয়ে এমন যদি কোনো তথ্য পাওয়া যায় যে, কোচিং সেন্টার বা অফলাইনের অন্য কোনো অংশ জড়িত তাহলে সেগুলোকেও আমরা নজরদারির মধ্যে আনবো। তদন্তের স্বার্থে সবকিছুই বিবেচনায় আসবে।

এছাড়াও পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও (ডিবি) কাজ করছে এ বিষয় নিয়ে। এ বিষয়ে ডিবি উত্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, পূর্বের অভিজ্ঞতা বলে এ ধরনের অপরাধীরা রিপিটেড ক্রাইম করে। সেই হিসেবে এবছরও তারা সক্রিয় থাকবে এমন আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই আমরাও মাঠে আছি। এই অপরাধ দমনে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা, ইন্টেলিজেন্স সংগ্রহ করা সেগুলো আমরা দেখছি। একই সঙ্গে, অনেক সময়েই আমরা দেখেছি যে অভিভাবকেরাও তাদের সন্তানদের ভর্তিতে অবৈধ উপায় অবলম্বন করেন। এমন যদি পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে এই অপরাধের সহযোগী হওয়ার অভিযোগে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close