দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জানাজায় লাখো মানুষের ঢল, ৬ গ্রাম লকডাউন

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লকডাউন সত্ত্বেও লাখো মানুষের সমাগমের ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। করোনার ঝুঁকির মধ্যে জেলায় লাখো মানুষ জমায়েতের ঘটনায় বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেলা খেলাফত মজলিশ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার বলেন, লাখো জনতার ঢল ঠেকাতে আমরা চেষ্টা করেছিলাম। চেয়েছিলাম জানাজায় যেন লোক সমাগম কম হয়। কিন্তু ওনার প্রতি মানুষের ভালোবাসা এতটাই ছিল, যার কারণে হাজার-হাজার লোকের সমাগম হয়ে যায়।তিনি বলেন, অধিক লোকের কারণে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির কথা আমরা বুঝি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তেমন একটা সমস্যা হবে না। কারণ যারা ঝুঁকিতে আছেন তাদেরকে তো প্রশাসন ঘরেই রেখেছেন।

গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ সকাল ১০টায় জানাজা শেষে সরাইল উপজেলার বেড়তলায় অবস্থিত জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিবেককে কবর দিয়ে আবেগকে প্রাধান্য দিয়ে যে কাজ করি, এটাই তার প্রমাণ। কারণ ধর্মীয় আদেশ ও সরকারি আদেশে লোক সমাগম নিষেধ করা হয়েছে। তার পরও এতো লোক সমাগম কেন? তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এত লোক কি আকাশ দিয়ে এসে জমায়েত হয়েছে। ঘটনা যা ঘটার ঘটে গেছে। এখন আর কিছু করার আছে বলে মনে হয় না।

তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, তারা (আইন শৃঙ্খলা বাহিনী) কোথায় ছিলেন। এটা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পুরো ব্যর্থতা ও এ দায় তাদের বলে তিনি মন্তব্য করেন।এদিকে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ই্‌উএনও) এএসএম মোসা ও সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহদাৎ হোসেন টিটু জানান, সরাইলের ছয়টি গ্রামের বেশিরভাগ লোক অংশ গ্রহণ করেছিল বলে আমাদের কাছে খবর আছে। তাই ছয়টি গ্রাম বেড়তলা, বলিবাড়ী, সিতাহরন, শান্তিনগর, মৈশার, টিঘর গ্রাম লকডাউন করা হয়।

আগামীকাল রবিবার থেকে এই গ্রামের মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। এক গ্রাম থেকে অন্যগ্রামে যেতে পারবেন না। বাজারে যেতে পারবেন না। তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য স্থানীয় মেম্বারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি পুলিশেকে সহযোগিতা করবে।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেলার আশুগঞ্জ ও সরাইল উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন বেশি অংশ নিয়েছে ওই জানাজায়। ওই সব গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। যেন ওই গ্রাম গুলোর লোকজন ঘর থেকে না বের হতে পারেন সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ছোট পরিসরে জানাজা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আমাদেরকে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা তারা করেননি।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, উনারা (মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ) আমাদের বলেছিলেন সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করবেন। কিন্তু সেটা তারা কেন করেননি কেন? তা ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close