আমদানি-রপ্তানীদেশজুড়েপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য

ব্রয়লার মুরগির নতুন দাম

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ রোজায় মানুষকে স্বস্তি দিতে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার দেশের চারটি বড় কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দাম নির্ধারণ করা হয়। কোম্পানিভেদে ১৯০-১৯৫ টাকা বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ভোক্তা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২২০ টাকার বেশি হবে না বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কোম্পানি পর্যায়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি সর্বোচ্চ ১৯৫ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। আর খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২২০ টাকা বিক্রি হবে। এর চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হলে তাঁদের রশিদ যাচাই-বাছাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গোয়েন্দা সংস্থা ও ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২২০-২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা হাত বদল হয়ে ভোক্তা পর্যায়ে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আরও বেশি দামেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে কাজী ফার্মস লিমিটেড, আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড, সিপি বাংলাদেশ এবং প্যারাগন পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডকে ডাকা হয়। সর্বশেষ পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০-১৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে প্রতিকেজি মুরগির দাম ৩০-৪০ টাকা কমে আসবে বলে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের জানান।

ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, বাজারে ব্রয়লার মুরগি অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হওয়ায় চার কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর জন্য আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাকা হয়। পরে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে দাম বেঁধে দেওয়া হয়। খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি মুরগি ২০০ টাকার বেশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। কোম্পানিগুলো প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকায় বিক্রি করেছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে তাঁরা প্রতিকেজি মুরগি ১৯০-১৯৫ টাকায় বিক্রি করবে।

সফিকুজ্জামান বলেন, কোম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে, কোনো খাতে সরকার বেশি হস্তক্ষেপ করবে না বরং সহযোগিতা করবে। কিন্তু বাড়তি দামে বিক্রি হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। এ কারণে কোম্পানিগুলো দাম কমাতে রাজি হয়েছে। মিলগেট থেকে দাম নির্ধারিত হবে। হাতবদলে দাম কত বাড়ছে, সেটা দেখা হবে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থাও তদারকি করবে। এরপর কোনো সমস্যা হলে, সমাধান না হলে আমদানি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

এ সময় কাজী ফার্ম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, ‘অনেক ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এ জন্য ফার্মে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। বাইরে অনেক হাতবদল হয়। তারপর দাম কত হচ্ছে, সেটা ভোক্তা অধিদপ্তর দেখবে। সারা দেশে মুরগি উৎপাদনে ঘাটতি হয়েছে। ৩০ বছরের ব্যবসায় এমন অবস্থা কখনো দেখা যায়নি। সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। চার কোম্পানি নির্ধারিত দামে বিক্রি করবে।

সফিকুজ্জামান আরও বলেন, মার্কেট লিডারেরা এ দাম নির্ধারণ করেছেন। এতে বাজারে প্রভাব পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিকেলে রমজান উপলক্ষে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ও চকবাজার ইফতারসামগ্রী ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ইফতারি খোলা অবস্থায় বিক্রি বন্ধ, পরিবেশনকারীদের হ্যান্ড গ্লোভস ও ক্যাপ পড়া, খাবার পরিবেশনে খবরের কাগজ ব্যবহার, খাবার তৈরিতে অনুনোমোদিত রং, পোড়া তেল, বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ, জিলাপিসহ ইফতার সামগ্রীতে নানা ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার না করার বিষয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে নন-ফুড গ্রেড প্লাস্টিকের পাত্র, রান্নার জায়গায় অস্বাস্থ্যকর যাতে না হয় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সভায় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক, বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ, চকবাজারের বিভিন্ন ইফতারসামগ্রী বিক্রেতাসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close