ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সারা দেশের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি ও ব্লাড ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য চেয়ে সব বিভাগীয় পরিচালক ও জেলা সিভিল সার্জনদের চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও জেলাগুলোতে মোট কতগুলো বৈধ লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কতগুলো লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে, কতগুলো লাইসেন্সের নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়েছে আর কতগুলো লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত প্রাপ্তিসাপেক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, ‘জনবলের অপ্রতুলতার কারণে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার একার পক্ষে সারা দেশের হাসপাতাল ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি ও ব্লাড ব্যাংকের সঠিক ও নির্ভুল হিসাব বের করা দুরূহ। এ কারণে সব বিভাগীয় পরিচালক ও সিভিল সার্জনদের কাছে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কতগুলো হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক রয়েছে এবং সেগুলোর মধ্যে কতগুলো লাইসেন্সপ্রাপ্ত, কতগুলো লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে, কতগুলো লাইসেন্স ছাড়া চলছে, তার বিস্তারিত পরিসংখ্যান পাঠাতে বলা হয়েছে।
আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত এসব তথ্য পাঠানোর সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তারা সব তথ্য-উপাত্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার কাছে পাঠাবেন। পাঠানো তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি আরও জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আগ পর্যন্ত ম্যানুয়ালি এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করা হতো। এরপর ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ এবং প্রয়োজন সাপেক্ষে সরেজমিন যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন লাইসেন্স প্রদান ও লাইসেন্স নবায়ন করা হয়। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে ১১ হাজার ১৭৮টি হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক অনলাইনে আবেদন করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কতগুলোকে লাইসেন্স প্রদান বা নবায়ন করা হয়েছে, তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না।’ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, রাজধানীসহ সারা দেশের হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযান এক মিনিটের জন্যও বন্ধ হবে না।
গত রবিবার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিএমএ নেতৃবৃন্দ এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। সচিব বলেন, যে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ামাত্র টাস্কফোর্স সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করবেন। এক্ষেত্রে জনগণের জন্য একটি টেলিফোন নম্বার দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সেই টেলিফোনের মাধ্যমে অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে অনতিবিলম্বে সাড়া দেওয়া হবে। আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে লাইসেন্স নবায়নের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নবায়ন না করলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, যেখানে (হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান) অনিয়ম ও দুর্নীতি হবে সেখানে স্বাস্থ্য এবং স্বরাষ্ট্র দুই মন্ত্রণালয় আলোচনা সাপেক্ষে আইনগতভাবে যা করা দরকার সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গত রবিবার মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, এককভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোথাও যাবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে। প্রয়োজনে তাদের নিয়ে সেখানে যাওয়া হবে। অভিযান বন্ধ হয়েছে এটা ঠিক নয়। আর এটা অভিযান কেন? হাসপাতালে অভিযান হবে না, ইনকোয়ারি (অনুসন্ধান) হবে। অভিযান তো হয় চিটাগাং হিল ট্র্যাকসে (পার্বত্য অঞ্চল), যেখানে সন্ত্রাসীরা থাকে।