দেশজুড়ে

বিসিএস ক্যাডার পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীসহ দুই ডজন বিয়ে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ হাসিবুর রহমান ও মনিরুল ইসলাম সাইফুল। সম্পর্কে তারা শ্যালক-দুলাভাই। বিসিএস ক্যাডার পরিচয় দিয়ে তারা বিয়ের রেকর্ড করেছেন। ইতমধ্যে বিয়ে করেছেন দুই ডজনের উপরে। এই তালিকায় আছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। এমনকি স্কুলের ছাত্রীদেরও বিয়ে করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা পরিচয়ে। কখনও প্রেমেরর ফাঁদে ফেলে আবার কখনও পারিবারিকভাবেই বিয়ে করেছেন তারা। তবে বিয়ের পরেই পাল্টে যায় তাদের চরিত্র। টাকা-পয়সা আর স্বর্ণালংকার নিয়ে চম্পট দেন তারা। বিয়ের পরে মন্ত্রণালয়ের পার্টিতে অংশ নিতে হবে এমন কথা বলে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়েছে ওই শ্যালক দুলাভাই। অবশেষে ওই বিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যকে আটক করেছে পটুয়াখালী র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা।

পটুয়াখালী র‌্যাব-৮ এর র‌্যাবের পাতানো কৌশলে দুই লাখ টাকা নিতে পটুয়াখালীতে আসলে ওই চক্রের সদস্য মোঃ হাসিবুর রহমানকে বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনাল থেকে তাকে আটক করা হয়। তার বাড়ী মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার দেউলি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা খবির উদ্দিনের ছেলে। দীর্ঘদিন ওই চক্রটি পটুয়াখালী এবং দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় কন্যা দায়গ্রস্থ পিতা এবং সাধারণ মানুষকে ভুয়া পরিচয় ও মিথ্যা প্রলভন দেখিয়ে একাধিক বিয়ে করে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নিয়েছে।

ঘটনার বরাদ দিয়ে পটুয়াখালী র‌্যাব-৮‘র কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত এসপি মোঃ রইছ উদ্দিন জানান, মাস ছয় আগে পটুয়াখালী সদর উপজেলার হাঝিখালী এলাকার ফোরকান মল্লিকের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে আটক হাসিব ও তার বোন জামাতা মনিরুল ইসলাম সাইফুল। এসময়ে উভয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে শীর্ষ কর্মকতার পদে রয়েছেন বলে দাবি করেন। পরিচয়কালে হাসিব তার নাম কাওছার এবং ব্রাহ্মনবাড়িয়া এলাকার চরগঙ্গা এলাকায় বাড়ী বলে জানান। পরিচয়ে একপর্যায়ে ফোরকান মল্লিকের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ও তার ভাই ছোবাহান মল্লিকে মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। গত ২১ জুলাই বিয়ের পর হাঝিখালী এলাকার বেকার যুবকদের মন্ত্রনালয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে ফোরকান, হারুণ এবং জাফরসহ ওই এলাকার অন্তত ১০ জনের কাছ থেকে তিন থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়।

গত ৬ অক্টোবর মন্ত্রনালয়ের এক উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তার বাসায় জমকালো অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার কথা বলে স্বর্নালংকার পরে ঢাকায় যেতে হবে বলে জানায় স্ত্রীদের। এসময় দুই স্ত্রী নিজস্ব এবং প্রতিবেশির কাছ থেকে স্বর্নালংকার নিয়ে স্থানীয় একটি বিউটি পার্লারে যায়। এসময় ওই স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায় শ্যালক দুলাভাই। এসময় জাফর মল্লিক নামে আরো এক ব্যক্তির স্ত্রী নিয়ে সটকে পরে তারা। ঘটনার দুইদিন পরে জাফরের স্ত্রীকে বরিশাল ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার থানায় জিডি করে র‌্যাবের সহায়তা চায়। পরে হাসিবকে আরো দুই লক্ষ টাকা দেয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি পটুয়াখালীতে আসে ওই টাকা নিতে। এসময় র‌্যাব তাকে আটক করে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে হাসিব জানান এ পর্যন্ত তিনি ও তার বোন জামাতা অন্তত দুই ডজন বিয়ে করেছেন। ছাত্রীরাই তাদের টার্গেট। এই তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীরাও আছেন। বিয়ের পর তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ এবং স্বর্নালংকার হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে সাইফুল আরো একটি বিবাহ প্রতারনা মিশনে লিপ্ত রয়েছে বলে র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছে হাসিব।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close